অপরাধ

নরসিংদীতে ট্রাকে স্টিকার ব্যবহার করে কোটি টাকার চাদাবাজী প্রশাসনের ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য করলেন চালকরা

বিশেষ প্রতিনিধি রাজু মিয়াঃ
পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য নরসিংদী। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে রাজধানীসহ দেশের অন্য অঞ্চলে পণ্য পরিবহনের কেন্দ্রবিন্দু এই জেলার বড় অপরাধগুলোর গোড়া হচ্ছে সাহেবপ্রতাপের পরিবহন ক্ষেত্রের চাঁদাবাজি। ট্রাকে নরসিংদী জেলা ট্রাক মালিক সমিতির স্টিকার ব্যবহার করে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা চাদা উঠাচ্ছে এই অফিসের কর্মকর্তারা।
রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ট্রাক মালিক সমিতি প্রতিটি ট্রাকে স্টিকার লাগিয়ে এ চাঁদা তুলছেন। দলীয় একটি রাজনৈতিক মহল এসব সমিতিরও নেতা।
কে, কোন অঞ্চল থেকে চাঁদা তুলবেন নিজেদের মতো ঠিক করে নিয়েছেন তাঁরা। কেউ কারও অঞ্চলে পা মাড়ান না। এক দল উত্তর পাশ বেছে নিয়েছে তো আরেক দল নিয়েছে দক্ষিন পাশ। ফলে পুরো নরসিংদীতে চলছে একধরনের সমঝোতাপূর্ণ চাঁদাবাজি।
তবে চাঁদা যাঁরা দিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁদের মতে, নরসিংদী সাহেবপ্রতাপের চাঁদাবাজিটা হচ্ছে ডাকাতির মতো। চোখের সামনেই সব হচ্ছে। প্রশাসন আছে কারও অভিযোগের অপেক্ষায়।
নরসিংদীর বিভিন্ন ট্রাক চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জেলাটির অপরাধজগতের সঙ্গে এ চাঁদাবাজির যোগসূত্র রয়েছে। চাঁদাবাজির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের অনেকে খুন, মাদক, চোরাচালান, অবৈধ দখলসহ অন্য অপরাধের সঙ্গেও যুক্ত আছে বলে জানা যায়।
নরসিংদী ট্রাফিক পুলিশের কাছে জানতে চাইলে কোন জবাব না দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। শুধু তাই নয় এই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ১ শত এর বেশি ফিটনেসবিহীন ট্রাক রয়েছে। প্রতিটি ট্রাক বাবদ প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা চাদা দিতে হয় পরিবহন শ্রমিক নেতার হাতে। টাকা না দিলে চালকদের মারধোরসহ বিভিন্ন হয়রানীও করে আসছে বলে জানান ট্রাকের চালক।
এই নরসিংদী সাহেবপ্রতাপের পরিবহন শ্রমিক নেতা মোঃ জাকির হোসেন মৃধা সংবাদকর্মীদের জানান, পুলিশের হয়রানী থেকে বাঁচতে নেওয়া হয় এই টাকা। সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষ এটার সাথে জড়িত বলে জানান সে।
নরসিংদী ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রাক চলাচল করে দিনে অন্তত ৩ হাজার। প্রতি ট্রাক থেকে চাঁদা নেওয়া হয় মাসে ৩ হাজার। ট্রাকের এই চাঁদাবাজির দিনের বেলার অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন মোঃ খোরশেদ আলম (তাবিজ)। আর রাতের বেলার অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন জাহাঙ্গীর আলম ভূঁঞা।
এদিকে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এই জেলার সাহেব প্রতাপ এলাকাগুলোতে কিছ’তেই এই চাদাবাজী থামাতে পারছে না পুলিশ। তাই এটা ব্যর্থতা বলে মনে করেন তারা। প্রশাসন একটু সচেতন হলে এই চাদাবাজী থাকবে না বলে আশা করেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *