Featured অপরাধ

ভৈরবে রেলের টিকিট কালোবাজারি মোমেন ধরাছোঁয়ার বাইরে, বিপাকে যাত্রীরা

মো: রফিকুল ইসলাম রুবেল, ভৈরব প্রতিনিধি:

কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলার সাথে ট্রেন চলাচলের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। এখান থেকে প্রতিদিন জেলার ইটনা, মিঠামইন, পাকুন্দিয়া, অষ্টগ্রাম, কটিয়াদী, বাজিতপুর, কুলিয়ারচর, পাশ্ববর্তী জেলার রায়পুরা, বেলাব,সরাইল, নবীগঞ্জ ও আশুগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় দুই হাজার যাত্রী যাওয়া আসা করে থাকে।সব মিলে ট্রেনের আসন সংখ্যা থাকে প্রায় ৪শতাধিক।

বেশিরভাগ টিকিট থাকে অনলাইনে নামেমাত্র কয়েকটি টিকিট থাকে কাউন্টারে তাও ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন স্টেশনের। অনলাইনে টিকিটে না পাওয়া গেলে ও ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের ১ নং প্লাটফর্মে মৌসুমী ষ্টোর, কাউন্টারে সামনে এবং ২নং প্ল‍্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ট্রেন ছাড়ার ১ থেকে ২ ঘণ্টা আগে থেকে মোমেন মিয়াসহ আরো ৫/৬ জন, এগারোসিন্দূর, মহানগর প্রভাতি, চট্টলা এক্সপ্রেস,জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস, বিজয় এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস এবং পারাবত এক্সপ্রেস এসব ট্রেনের টিকিট দ্বিগুণ এমনকি তিনগুণ টাকায় বিক্রি করে থাকে। নামপ্রকাশের অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জানান মোমেন মিয়াসহ কয়েকজন প্রতিদিন রেলের টিকিট বিক্রি করে কেউ কিছু বলে না , মনে হয় সে উপরের কোন মহল কে ম্যানেজ করেই এসব করে এবং ২ থেকে ৩ গুণ বেশি দামে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের ১ নং প্লাটফর্মে মৌসুমী ষ্টোর নামে মোমেন মিয়ার একটি দোকান রয়েছে। বিভিন্ন কৌশলে তার একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ও দোকানের কর্মচারী দিয়ে এসব টিকিট বিক্রি করে থাকে। এসব টিকিট ভৈরববাজারের কম্পিউটার দোকান সহ তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিদিনিই প্রায় কয়েকশ টিকিট অনলাইন থেকে নামিয়ে কালোবাজারিদের হাতে পৌঁছে দিয়ে থাকে। তারা অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও মুঠোফোন নাম্বার ব্যবহার করে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করে থাকে । তবে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে টিকেট কালোবাজারীর গডফাদার মো: মোমেন মিয়া। এ বিষয়ে অভিযোক্ত মোমেন মিয়ার সাথে প্রতিবেদক জানতে চাইলে কৌশলে এরিয়ে চলে যায়।

বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বললে তাড়া বলেন, অনলাইনে টিকিট নিতে যাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর প্রয়োজন পড়ে। আর কালোবাজারি চক্র নানাভাবে অন্যদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সংগ্রহ করে অনলাইন থেকে টিকিট নামিয়ে নিচ্ছে। এসব টিকিটই কালোবাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে । আর ট্রেনে টিকিট যাচাইয়ের ব্যবস্থা থাকলেও কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর যাচাইয়ের ব্যবস্থা না থাকায় টিকিট কালোবাজারি হয় বেশি । তাই কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান সাধারণ যাত্রীরা। ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী মো: সোহাগ মিয়ার অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

টিকেটের কুমির মোমেন
টিকেটের কুমির মোমেন

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী চৌকি ভৈরববাজার এক কর্মকর্তা বলেন আমাদের জনবলের কারণে দায়িত্ব পালনের হিমশিম খাচ্ছি। তাই বিভিন্ন অপরাধ গুলো চিহ্নিত করা সমস্যা হচ্ছে তবে অনলাইনের টিকিট যেহেতু গাড়িতে টিটি ও টিসি ওনারা টিকিট চেক করলে আমাদের দায়িত্বটা অনেক টা কমে যায়।

ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলিম হোসেন সিকদার বলেন , ৪ এপ্রিল মৌসুমী ষ্টোরের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামী গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। কেউ যদি কালোবাজারি টিকিট বিক্রি করে থাকে বিষয়টি আমার জানা নেই তবে ফ্যাট ফর্মে যাত্রীদের কাছে জনসম্মুখে কেউ টিকিট বিক্রি করলে তাকে আটক করে মামলা দিয়ে আইনের আওতায় আনা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *