বিশেষ প্রতিবেদক : বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩ হাজার শিশু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব শিশুর অধিকাংশই ডায়াবেটিস-জনিত সমস্যার কারণে অন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে আছে।
বুধবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক ইন সেন্টারে আলোচনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত একটি প্রকল্পের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ‘ডায়াবেটিক শিশুদের চক্ষুসেবার সমন্বিত পদক্ষেপের পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়’ শীর্ষক এ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ডায়াবেটিক শিশুদের অন্ধত্বের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে সমন্বিত চিকিৎসার পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিক শিশুর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, উল্লেখ করে প্রকল্প মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়, ডায়াবেটিস আক্রান্ত শিশুরা সঠিক চিকিৎসার অভাবে চোখের বিভিন্ন রোগে ভুগছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিশুরা একেবারেই অন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ জানায়, আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইউএসএআইডির ‘শিশু অন্ধত্ব প্রতিরোধ কর্মসূচি’র সহযোগিতায় অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি যৌথভাবে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করে।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে দেড় বছরে রাজধানীর বারডেম ও বগুড়া ডায়াবেটিক হাসপাতালে ৭ হাজারেরও বেশি চক্ষুরোগীকে সমন্বিত সেবা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩ হাজারের অধিক ডায়াবেটিস আক্রান্ত শিশু।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এশিয়া-প্যাসিফিক অপথামোলজি একাডেমির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আভা হোসেন।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সেক্রেটারি জেনারেল ডা. সাইফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অরবিস ইন্টারন্যাশনালের রিসার্চ ডিরেক্টর ড. নাথান জি কংডন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জাফর খালেদ, ইউএসএআইডির ঢাকা অফিসের হেলথ সার্ভিস ডেলিভারি পিলার লিড এডনা জোনাস এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনীর আহমেদ।
অনুষ্ঠানে প্রকল্প মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ড. নওশাদ ফায়েজ।
এছাড়া, বারডেম হাসপাতালের চিলড্রেন ইন ডায়াবেটিস প্রকল্পের সমন্বয়ক ডা. বেদওয়ারা জাবিন এই প্রকল্পের অভিজ্ঞতা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন চক্ষু চিকিৎসক গবেষণালব্ধ তথ্য উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা শিশুদের ডায়াবেটিস-জনিত অন্ধত্ব প্রতিরোধে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সেন্টারের সহযোগিতায় আরো সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ, হাসপাতালের বাইরে বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় প্রাথমিক চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্র, ডাক্তার-নার্স-মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েটসহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।