ভৈরব ( কিশোরগঞ্জ ) থেকে মো: রফিকুল ইসলাম রুবেল:
গত ৬ মাস আগে ফেসবুকে পরিচয়ে প্রেম। প্রেমের সুবাদে ভৈরবের মেঘনা ব্রিজের নিচে ঘুরতে আসেন প্রেমিকা ও প্রেমিক পলাশ চন্দ্র দাসসহ প্রেমিকের আরো একজন বন্ধু। তারা সবাই কিশোর বয়সী। ঘুরতে এসে প্রেমিক ও এক ছিনতাইকারীর ধর্ষণের শিকার হন ওই কিশোরী। ধর্ষণের শিকার হওয়া কিশোরীর বাড়ি কটিয়াদি উপজেলার নিলক্ষী হাফানিয়া গ্রামে।
গত ২৩ মে সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটেছে ভৈরব মেঘনা রেল ব্রিজের পাশের একটি ঝোপে। এ ঘটনায় ধর্ষণে অভিযুক্ত প্রেমিক পলাশ চন্দ্র দাস ও ছিনতাইকারী নির্জন ওরফে আরিয়ানসহ সহযোগী আরো ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত প্রেমিক পলাশ চন্দ্র দাস (১৮) নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পিরিজকান্দি গ্রামের মনিন্দ্র দাসের ছেলে এবং নির্জন ওরফে আরিয়ান (১৭) ভৈরব শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার মুকসুদ মিয়ার বাড়ির সুমন মিয়ার ছেলে।
ধর্ষণে সহযোগিতা করায় গ্রেফতারকৃত ৬ কিশোর হলো- প্রেমিক পলাশ চন্দ্র দাসের বন্ধু পিরিজকান্দি গ্রামের সেন্টু মিয়ার ছেলে রাব্বি (১৯), ভৈরব শহরের ভৈরবপুর দক্ষিণ পাড়া এলাকার সুজন মিয়ার ছেলে সান (১৭), একই এলাকার আংগুর মিয়ার ছেলে আবদুল্লাহ (১৮), শহরের কমলপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে পাপন (১৮), শহরের চন্ডিবের এলাকার মিলন মিয়ার ছেলে হাসান (১৭) ও একই এলাকার আনাছ মিয়ার ছেলে ফুয়াদ (১৯)।
গ্রেফতারকৃত ৮ জনের মধ্যে প্রেমিক পলাশ চন্দ্র দাস ও ছিনতাইকারী আরিয়ান ধর্ষণ করেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই কিশোরী। আর অন্য ৬ কিশোর ওই অপরাধের সহযোগিতা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ভৈরব থানায় একটি মামলা করে। মামলার পর শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্তদের কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠায় ভৈরব থানা পুলিশ এবং ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কিশোরীকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকে পলাশ চন্দ্র দাসের পরিচয় হয় ওই প্রেমিকা কিশোরীর। বৃহস্পতিবার তারা দু-জন নিজেদের মধ্যে ফোনে যোগাযোগ করে প্রথমে ভৈরবের মানিকদী কালি নদী সেতু সংলগ্ন একটি রেস্টুরেন্টে আড্ডা-কথাবার্তা শেষ করে বিকেলে তারা দু-জন মেঘনা নদীর পাড়ে ঘুরতে আসে। সন্ধ্যার আগমুহূর্তে ব্রিজের পাশে থাকা একটি জঙ্গলের ঝোপে প্রেমিক পলাশ দাস কিশোরীকে ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষণের ঘটনাটি দেখে ফেলে ওই এলাকায় অবস্থানরত কয়েকজন ছিনতাইকারী। তারা প্রেমিক-প্রেমিকাকে আটক করে দুটি মোবাইলসহ তাদের টাকা ছিনিয়ে নেয়।
ঘটনার সুযোগ বুঝে ছিনতাইকারী নির্জন ওরফে আরিয়ান ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। এসব ঘটনায় আরিয়ানকে সহযোগিতা করে অপর সহযোগী ছিনতাইকারীরা। কিশোরীর কান্না-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে পুলিশকে খবর দিলে ভৈরব শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই কামাল মিয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভিকটিম কিশোরীসহ ৮ জনকে আটক করে ফাঁড়ি থানায় নিয়ে যায়। পরে রাত ৯টার দিকে শহর ফাঁড়ি থেকে ভৈরব থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ভৈরব থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করতে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং আসামিদের জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তারের রিপোর্ট পাওয়ার পর আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।