সিনিয়র প্রতিবেদক: ‘চেয়ারম্যান নন, গোলাম মোহাম্মদ কাদের জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করবেন।’
সোমবার রাতে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ এমপির নেতৃত্বে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, জিএম কাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আছেন। তিনি দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু হুট করে আলাপ আলোচনা ছাড়া তাকে নতুন চেয়ারম্যান ঘোষণা হঠকারি সিদ্ধান্ত। কারণ তাকে জাপার চেয়ারম্যান করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় তিনি জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। তাকে নতুন চেয়ারম্যানের ঘোষণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বনানী অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে জিএম কাদেরকে জাপার নতুর চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন। কিন্তু দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা তাকে দলীয় ফোরামে আলোচনা ছাড়া এখনই চেয়ারম্যান মানতে নারাজ। আর আলোচনা ছাড়া নিজে নিজে চেয়ারমান ঘোষণায় জিএম কাদেরের ওপর দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ ক্ষুব্ধ হন।
ঘোষণার একদিন পরেই এ বিষয়ে পাল্টা বিবৃতি দেয়ার কথা ছিল। বিবৃতিও প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু তিনি আরো একদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। এরই মধ্যে দুপুরে জিএম কাদের ছুটে যান রওশনের বাসায়। জিএম কাদেরের পক্ষ থেকে বলা হল নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে বিরোধীদলের নেতা দোয়া করে দিয়েছেন। রাতে জিএম কাদেরের প্রেস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভ রায় দাবি করেন, রওশন বিরোধী নেতা, জিএম কাদের জাপার চেয়ারম্যান।
এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রওশন এরশাদসহ দলের নেতারা জিএম কাদেরের ওপর আরো ক্ষুব্ধ হন। তারপরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেন তারা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ, জ্যেষ্ঠ নেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, ফখরুল ইমাম এমপি, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, সেলিম ওসমান এমপি, প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন খান, প্রফেসর মাসুদা রশীদ চৌধুরী এমপি, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান এমপি।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, বৃহস্পতিবার পার্টির পক্ষ থেকে একটি প্রেস কনফারেন্স করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনটি মূলত ছিল জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ যে সম্মান ও ভালোবাসা দেখিয়েছেন সে বিষয়ে সবাইকে শ্রদ্ধা জানানো।
কিন্তু, হঠাৎ সেখানে জাতীয় পার্টির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রকৃত অর্থে জাতীয় পার্টিতে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। এরকম সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এতে আরো বলা হয়, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে তিনি গঠনতন্ত্রের ধারা ২০-এর উপধারা ২ এর খ এর দেয়া ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন না। যথা মনোনীত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রেসিডিয়ামের সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতামতের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করিবে। ভুলে গেলে চলবে না চেয়ারম্যানের অবর্তমানে গঠনতন্ত্রের ধারা ২০ উপধারা ২ এর ক উপেক্ষা করা যাবে না।