সমাধান ডেস্ক: ‘লাঙলে ভোট দিয়ে আরেকবার সুযোগ দিন, দেশে সুখ-শান্তি ফিরিয়ে আনব। জানমালের নিরাপত্তা দেব। গুম-অত্যাচার-নির্যাতন থেকে মানুষকে মুক্তি দেব।’
বৃহস্পতিবার ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনে আগাম নির্বাচনী গণসংযোগকালে এলাকাবাসীর উদ্দেশে এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
এর আগেও উক্ত সংসদীয় এলাকার সংসদ সদস্য ছিলেন প্রাক্তন এই রাষ্ট্রপতি। একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও তিনি এই এলাকা থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হচ্ছেন।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই গণসংযোগ শুরু করেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
দলের নেতাকর্মী নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনের শাহজাদপুর, কড়াইল বস্তি ও মহাখালী কাঁচাবাজার এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ চালান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
এ সময় পথচারীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। তাদের কাছে লাঙল প্রতীকে ভোট চান তিনি।
নির্বাচনী গণসংযোগকালে একাধিক পথসভায় বক্তব্য রাখেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এলাকাবাসীর উদ্দেশে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আবারও সুযোগ দিন, আপনাদের মুক্তি দেব। মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য আমি এখনো বেঁচে আছি। মানুষের দোয়ায় আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য।
তিনি বলেন, ঢাকা-১৭ আসনের এমপি থাকাকালে এই এলাকায় পানির কষ্ট দূর করতে ১৪টি পানির পাম্প বসিয়েছিলাম। আমরা রাস্তা-ঘাট করেছি, মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন করেছি।
‘লাঙলে ভোট দিবেন, আমরা মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দেব। আমাদের চেয়ে কেউ বেশি উন্নয়ন করতে পারেনি, কেউ পারবেও না,’ জোর দিয়ে বলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বলেন, খুন-গুম আর রক্তে দেশ আজ ভালো নেই। প্রমাণ হয়েছে, শুধু জাতীয় পার্টি ছাড়া কেউ এ দেশে সুশাসন দিতে পারে না। দেশের মানুষও আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। লাঙলে ভোট দিন, আপনাদের সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দেব।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন- পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী, সুনীল শুভ রায়, অবসরপ্রাপ্ত মেজর খালেদ আখতার, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, আমির হোসেন ভূইয়া এমপি।
বেলা ১১টায় বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্ক থেকে নেতাকর্মীর বহর নিয়ে বের হয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গুলশানের শাহজাদপুর ঝিলপাড়ে এক জনসভায় বক্তৃতা করেন। এরপর কড়াইল বস্তিসংলগ্ন আনসার ক্যাম্প মাঠে এবং মহাখালী কাঁচাবাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি।
এ সময় জাপার চেয়ারম্যান বলেন, আমি যখন ক্ষমতা ছেড়েছি তখন চালের দাম ১০ টাকা ছিল, নিত্যপণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ছিল। মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণায় যারা উল্লসিত, তারা গ্রামের খবর জানে না। মানুষের কষ্টের খোঁজ রাখে না। সবাই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ব্যস্ত। মানুষের কষ্টের খোঁজ রাখার সময় নেই কারো। খবরের কাগজ খুললেই শুধু মানুষ খুন আর রক্তের খবর। ইচ্ছে করলেই এই খুন বন্ধ করা যায়। কিন্তু কারো খেয়াল নেই, কারো ইচ্ছে নেই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করার।
এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, রাজনীতির জীবন্ত কিংবদন্তি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ দেশের মানুষের পরীক্ষিত বন্ধু। তিনি দেশে সুশাসন, কল্যাণ, উন্নয়ন ও জীবনের নিরাপত্তা দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সব সেক্টরে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সফল ছিলেন।
দেশ বাঁচাতে ঢাকা-১৭ আসনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান তিনি।
গণসংযোগকালে জাপার ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু, জাপা নেতা সুলতান আহমেদ সেলিম, হেলাল উদ্দিন, মোস্তফা আল ফয়সাল, সাইফুল ইসলাম পিটু, আবুল খায়ের, নুরুল ইসলাম, আবদুল আজিজ, আলাউদ্দিন মৃধা, এ এন এম রফিকুল ইসলাম সেলিম, আবুল হাসেম, মো. আলী শেখ, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, নুর ইসলাম, আবদুস সাত্তার, মিজানুর রহমান দুলাল, এম এ রহিম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।