মো: ছাবির উদ্দিন রাজু, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:
আফসোস এইদেশে এখনো যৌতুকের জন্য স্ত্রী হত্যা বন্ধ করা হলোনা। প্রায় ৩০ টি বছর রাষ্ট্রপ্রধান দুই জন নারী,
কিন্তু তবুও এইদেশের অসহায় নারীদের ভাগ্য পরিবর্তন হলোনা। যুগের পর যুগ এইদেশে নারীরা স্বামীর বাড়ির বিভিন্ন চাহিদা মিটিয়েই স্বামীর বাড়িতে থাকতে হয়!
একটু ভাবলে এর হিসাবই মিলানো যায়না! কারণ মানুষ যেকোনো কাজ করুক সেই কাজের বিনিময় পায়।
কিন্তু এইদেশের মধ্যবিত্ত ও অসহায় নারীরা বিয়ে বসে স্বামীর বাড়িতে যায় টাকা পয়সা সোনাদানা সাথে নিয়ে, তবুও স্বামীর বাড়িতে কাজ করে উপোষ থাকতে হয়।
এর চেয়ে আশ্চর্য জনক বাস্তবতা আর কি হতেপারে।
১৮/২০ বছর লেখাপড়া শিখে একটা মেয়ে স্বপ্ন দেখে বিয়ে হবে ভালো একজন স্বামী পাবে, কিন্তু আসলে ঐ মেয়ে স্বামীর বাড়িতে গিয়ে কি পায় আর কি হারায়
১৮/২০ বছর পর্যন্ত লেখাপড়া শিখে একটা মেয়ে স্বামীর বাড়িতে যেতে হয় যৌতুকের টাকা পয়সা,সোনা দানা, খাট পালং, আলমিরা, ফ্রিজ, টেলিভিশন, লেপ তোষক, বাটা বদনা সহ অনেক অনেক অনেক কিছু নিয়ে!
এইসব আবদার পূরণ করে স্বামীর বাড়িতে গিয়ে রাতদিন গাধার মতো ঘরে বাহিরে কাজ নিয়ে খাটতে হয়, খাটলেও টাইম মতো খাবার জোটেনা।। কারণ শাশুড়ী নামের নরপশু প্রতিটি ঘরে ঘরেই আছে। সাথে ননদ দেবরের অত্যাচার।
কিছুদিন গেলে ফকিন্নিদের নতুন নতুন যৌতুকের চাপাচাপি শুরু হয়। যেমন শীতের পিঠা গরমের আম কাঠাল, রমজানের ইফতারি ইদের কাপড় চোপড় ও সেমাই চিনি। এরপর কোরবানে ছাগলের টাকা। আগত সন্তানাদি হলে স্বর্ণের চেইন সহ নাম রাখার আকিকার গরু বা ছাগলের টাকা।। এইসব আবদার না মিটাতে পারলেই শুরু হয় নির্যাতন অত্যাচার, এইভাবেই একদিন নিজ স্ত্রীকে হত্যা করে চালিয়ে দেওয়া হয় আত্মহত্যা।।
এটাই হলো দেশের মধ্যভিত্ত ও সাধারণ পরিবারের মেয়েদের পরিনতি।
হ্যাঁ এইভাবেই দেশের লক্ষ লক্ষ মেয়ের স্বপ্নে ভরা জীবন তিলে তিলে নিরবে শেষ করে দেওয়া হয়, কয়জনের বিচার হয় ?
দুইজন রাষ্ট্রপ্রধান নারী শাসক শাসন করে গেলেও খোদ নারীদের যৌতুক নিয়ে কোন কঠোরতা কার্যকর করেননি। নারীরা যেই খাদের কিনারায় ছিল সেখানেই আছে।
একটা মেয়েকে হাজারো নির্মমতা মেনে নিতে হয় শুধু এই আশায় যে একদিন হয়তো সুখ পাখিটা ধরা দেবে।
কিন্তু আসলে তা আর হয়ে ঊঠেনা নির্মম নির্যাতনের কাছে হার মেনে চলে যেতে হয় নাফেরার দেশে।।
“চট্রগ্রামের বায়েজিদ থানায় যৌতুকের জন্য খুন”
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার চক্রেসাে কানন এলাকায় এই গৃহবধূ কে যৌতুকের জন্য পিটিয়ে হত্যা করেছে তার স্বামী শ্বশুর শাশুড়ি মিলে।ঘটনার পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে।
নিহতের বাবা অভিযোগ করেন, মাত্র ৭ মাস আগে তার মেয়েকে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেন। ওই সময় যৌতুক হিসেবে স্বামীকে টাকা-পয়সার স্বর্ণ,র্ফানিচার দেয়া হয়। পরে বিভিন্ন সময় ব্যবসা করার অজুহাতে টাকার কথা বলে তার স্বামী স্ত্রীকে চাপ দিত এবং শারীরিক নির্যাতন করত। এসব বিষয় নিয়ে সামাজিকভাবে একাধিকবার বৈঠক হয়। যৌতুকের টাকার জন্য ফের সে স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করে হত্যা করে।
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) কামরুজ্জামান বলেন , ফারজানা নামের এক গৃহবধূ গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেছে বলে পরিবারের সদস্যরা আমাদের জানিয়েছেন । গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘােষণা করেন ৷ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানাে হয়েছে । তদন্তের রিপাের্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে ।
এর পরেও কি যৌতুকের বিরুদ্ধে কোন সরাসরি আইন পাস হবেনা?
কেন একটা মেয়ে টাকা দিয়ে অন্যের বাড়িতে বদলা খাটতে হবে?
কেন একটা মেয়ে টাকা দিয়ে অন্যের বাড়িতে উপোষ থাকতে হবে?
কেন একটা মেয়ে টাকা দিয়ে স্বামী নামক এক নপুংসকের যৌন চাহিদা মিটাতে হবে?
সরকারের কাছে একটাই চাওয়া এইভাবে আর কত রোকসানা কে হত্যা করলে যৌতুক প্রথা বন্ধ করবেন?(সগৃ) তথ্য সংগ্রহে মোঃ ছাবির উদ্দিন রাজু চেয়ারম্যান এনপিএস কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা,সভাপতি বিএমএসএফ ভৈরব উপজেলা শাখা, সাধারণ সম্পাদক কিশোরগঞ্জ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ ভৈরব শাখা