নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর বাসার সামনে ছাত্রদলের বিবাদমান দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো দুই ছাত্রদল কর্মী।
নিহত ফয়জুর রহমান রাজু (২৬) সিলেট মহানগর ছাত্রদলের প্রাক্তন যুগ্ম সম্পাদক। তিনি মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের ফজর আলীর ছেলে। তিনি সিলেট ল কলেজে এলএলবিতে অধ্যায়নরত ছিলেন। তিনি ভাগ্নে রাজু নামেও পরিচিত ছিলেন।
শনিবার রাত পৌনে ১১টায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজুর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই ফারুক আহমদ। এর আগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর কুমারপাড়া এলাকায় আরিফুল হক চৌধুরীর বাসার অদূরে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। আহত উজ্জল এবং মুস্তাফিজ নামের আরো দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ছাত্রদলের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী জানান, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে গুরুতর আহত রাজু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার লাশ বর্তমানে হাসপাতালের হিমাগারে রাখা রয়েছে। রাজু জেলা ছাত্রদলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক এখলাছুর রহমান মুন্না গ্রুপের কর্মী বলেও জানান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আরিফুল হক চৌধুরীকে বেসরকারিভাবে মেয়র ঘোষণা করেন সিলেটের রিটার্নিং অফিসার মো. আলীমুজ্জামান। এরপর বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিজয় মিছিল নিয়ে আরিফুল হক চৌধুরীকে মেন্দিবাগস্থ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সম্মুখ থেকে কুমারপাড়াস্থ তার বাসার দিকে আসছিলেন। পথে আরিফুল হকের বাসা সংলগ্ন মালঞ্চ কমিউনিটি সেন্টারের সম্মুখে ছাত্রদলের বিবাদমান এখলাছুর রহমান মুন্না ও আব্দুর রকিব চৌধুরী গ্রুপের ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় অতর্কিত হামলায় মুন্না গ্রুপের ছাত্রদল নেতা ফয়জুর রহমান রাজু, লিটন ও উজ্জ্বল আহমদ আহত হন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করেন তারা।
সিলেট জেলা ছাত্রদলের প্রাক্তন সাংগঠনিক সম্পাদক এখলাসুর রহমান মুন্না বলেন, ‘প্রাক্তন ছাত্রদল নেতা আব্দুল রকিবের নেতৃত্বেই এই হামলার ঘটনা ঘটানো হয়।’ হামলাকারীরা ঘটনার সময় তার কর্মীদের দিকে গুলি বর্ষণ করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার প্রাক্তন ছাত্রদল নেতা আব্দুর রকিবের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব (মিডিয়া) জানান, ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ববিরোধ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আহত তিনজনের মধ্যে একজন হাসপাতালে মারা গেছেন বলে তিনি খবর পেয়েছেন।
এদিকে, রাত ১২টার দিকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ করেছে নিহত রাজুর অনুসারীরা। নিহত রাজুর মরদেহ হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে। রোববার সকালে ময়নাতদন্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।