Featured অপরাধ

ভৈরবে ভুয়া ভিসা-টিকিট দিয়ে ১৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মোঃ রফিকুল ইসলাম রুবেল, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুয়া ভিসা-টিকিট দিয়ে ১৫লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।ভুক্তভোগী নারী ও এক যুবক সর্বস্ব হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন।উপজেলার কালিকা প্রসাদ ইউনিয়নের আদর্শ পাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম এর ছেলে শাহ আলম মিয়ার বিরুদ্ধে এই প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। প্রতারণার শিকার ওই নারী ভৈরব পৌর শহর পঞ্চবটি এলকার ভাড়াটিয়া নজরুল ইসলাম স্ত্রী নাজমা বেগম এবং যুবক পৌর শহরের জগন্নাথপুর এলাকার মোঃ মোমরাজ মিয়া ছেলে মোঃ বাবু মিয়া।

ভোক্তভোগী নাজমা বেগম ও বাবু মিয়া জানান টাকা ফেরত দেওয়া জন্য দালাল শাহ আলম কে ফোন করলে ফোনের মাধ্যমে গালিগালাজ করে। টাকা চাইলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। পাওনা টাকা ও পাসপোর্ট ফেরত পেতে ভুক্তভোগী নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ও যুবক ভৈরব থানায় আলাদা দুটি লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, প্রায় ২ বছর আগে দালাল শাহ আলম মিয়া ভোক্তভোগী নাজমা বেগমের ছেলেকে বিদেশে রোমানিয়া পাঠানোর কথা বলে মোট ৮,৮৫,০০০/- (আট লক্ষ পঁচাশি হাজার টাকা) নেয়।
কিন্তু ২ বছর নয় মাস হয়ে গেলে ও তার ছেলেকে বিদেশ নেওয়ার কোন খবর নাই। নাজমা বেগম তাগদা শুরু করলে শাহ আলম দালাল তাকে একটি ভিসা দেয়। ভিসা চেক করার পর জানতে পারে ভিসাটি ভুয়া। দালাল শাহ আলমের বাড়িতে গিয়ে ভুয়া ভিসা দিলেন কেন জানতে চাইলে আমাকে গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং আমার ছেলের পাসপোর্টটি ও আর দিবে না বলে হুমকি দেয়।

ভোক্তভোগী নাজমা বেগম আরো বলেন এখন সে আমার ফোন নাম্বার ব্লক করে রেখেছে। ফোন দিতে পারি না। তার বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী গালাগালাজ করে।অনেক কষ্টে করে কিস্তি ও সুদের উপর লোন করে টাকাগুলো এনে তাকে দিয়েছিলাম । এখন ছেলে মেয়েকে নিয়ে অনেক কষ্টে করে দিন কাটাতে হচ্ছে।

টাকা ও ছেলের পাসপোর্ট ফিরে পেতে ভুক্তভোগী নাজমা বেগম গত ১৯ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ বরাবর তথ্য প্রমাণ সহকারে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

আরেক ভুক্তভোগীবাবু মিয়া জানান দালাল শাহ আলম সাথে আমর এক বন্ধুর মাধ্যমে পরিচয় হয়।
আমাকে বিদেশে রুমানিয়া পাঠাবে বলে গত বছরের ২৫ জানুয়ারি আমার মূলপাসপোর্ট ও নগদ ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা দেয়। এর কিছু দিন পর রুমানিয়া পাঠানোর কন্ট্রাক ফরম করে আরো নগদ ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা নেয়। পরবর্তীতে দালাল শাহ আলম আমাকে রুমানিয়ার ভিসা দিয়ে আমার বসত ঘর হইতে (দুই লক্ষ) টাকা নিয়ে যায়। এর কিছু দিন পর বিমানের টিকেট দেখিয়ে আমার কাছ থেকে জগন্নাথপুর এলাকার পিতা-মৃত মহরম আলী ছেলে মোঃ ইসহাক মিয়াকে সাথে নিয়ে এসে শাহ আলম আরো নগদ এক লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। আমি ভিসা এবং টিকেট যাচাই করে দেখতে পাই ভিসা নকল এবং টিকেট ভুয়া। তারপর দালাল শাহ আলম কে নকল ভিসা এবং টিকেটের কথা জানাইলে সে আমার সাথে বিভিন্ন অজুহাতে টালবাহানা শুরু করে। পরবর্তীতে আমি তার বাড়ীতে গেলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাই এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

বাবু মিয়া কান্না কন্ঠে আরো বলেন আমার ফোন নম্বরটি ব্লক করে রাখছে। আমি তাকে সর্বমোট ৭ লক্ষ টাকা দেয়। অনেক কষ্টে দার দেনা করে ৭ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রতারণার স্বীকার হয়ে নিঃস্ব প্রায়। আমার অসুস্থ ছেলে মেয়ে এবং পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। এ বিষয়ে গত ৯ অক্টোবর ভৈরব থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে তিনি জানান।

প্রতারণা বিষয়ে জানতে প্রতিবেদক দালাল শাহ আলমের বাড়িতে একাধিকবার গিয়েও শাহ আলম কে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীদের সাথে কথা হলে জানা যায় বিদেশে লোক পাঠানো কথা বলে প্রতারিত হওয়া অনেক লোকজন তার খোঁজ করতে বাড়িতে আসে। এখন তাকে এলাকায় দেখা যায় না। শাহ আলমের ব্যক্তিগত মোবাইল ০১৯৬৮-৬৪৯৯৪২ নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও সে ফোন রিসিভ করেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *