লিওনেল মেসি মুখটা আবারো বিষন্ন। হতাশায় ভেঙে পড়েছেন। তখনও খেলার ৪৫ মিনিট বাকি। কিন্তু স্কোর লাইন দেখেই মেসি বুঝে ফেলেছেন পরের ৪৫ মিনিটের ভবিষ্যৎ। তার দল প্রথমার্ধে পিছিয়ে ১-৪ গোলে।
ড্রেসিংরুমে মেসির বসা ছবিটা গোটা বার্সেলোনার আয়না। সেখান থেকে ফিরে আসা কঠিন-ই নয় একদম অবাস্তব। নাহ মেসিদের জন্য অবাস্তব কিছুই নয়। ২০১৭ সালে পিএসজির বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধের চার গোল এবং প্রথমার্ধের দুই গোল সহ মোট ৬-১ গোলে ম্যাচ জিতেছিল বার্সেলোনা। তিন বছর পর কাতালান শিবিরে ব্যাপক রদবদল। সেদিনের ম্যাচসেরা নেইমার নেই। ইনিয়েস্তার মতো অধিনায়কও নেই। নেই লুইস এনরিকের মতো ম্যানেজার। তাইতো গতকাল বায়ার্নের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধেই সব শেষ বার্সেলোনার।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দেশে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত থাকবেন এমন পণ করেই বার্সেলোনা থেকে উড়াল দিয়েছিলেন মেসিরা। লক্ষ্য চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল। এবার যে করেই হোক পেতে হবে শিরোপা। কিন্তু শেষ আটের বাঁধা টপকাতে পারল না মেসির দল। রেকর্ড ছয়বারের ব্যালন ডি অর জয়ীর স্বপ্ন ভেঙে চুরমার বায়ার্ন ঝড়ে। মার্কা নিজেদের পত্রিকায় শিরোনাম করেছে,‘বার্সেলোনাকে ‘‘অপমান’’ করল বায়ার্ন।’
বার্সেলোনার জালে গুনগুনে আট গোল দিয়েছে বায়ার্ন। এমন গোলবন্যা মেসি দীর্ঘ ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে একবারও দেখেননি। শুধু মেসি কেন বর্তমান স্কোয়াডে থাকা কেউ-ই এমন হতশ্রী পারফরম্যান্স শেষ কয়েক দশকে দেখেননি। মেসি তখনও পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখেনি। বার্সেলোনার বর্তমান কোচ কুইক সেটিয়েনও আসেননি পৃথিবীতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরের বছরের ঘটনা। ১৯৪৬ সালে সেভিয়া কোপা ডেল রের ম্যাচে বার্সেলোনাকে এমন লজ্জায় ফেলেছিল। সেদিনও কাতালানরা হজম করেছিল আট গোল।
৭৪ বছর পর বার্সেলোনা এমন যন্ত্রণার সাক্ষী হলো। এছাড়া ইউরোপিয়ান লিগেও প্রথমবার পাঁচ গোলের বেশি হজম করল তারা। ১৯৭৬ সালে ইউইএফএ কাপে লেভস্কি সোফিয়া ৫-৪ গোলে হারিয়েছিল বার্সেলোনাকে।
মেসি পারেননি। পারেননি পিকে, স্ট্যাগান, সুয়ারেজরাও। বায়ার্নের পাওয়ার ফুটবল,দৃঢ় মনোবল ও প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেওয়ার মনোভাবে স্রেফ উড়ে গেছে বার্সেলোনা। আর বার্সেলোনা হেরেছে অগোছালো ফুটবল, নড়বড়ে মানসিকতায়। এ ম্যাচকে ঘিরে বার্সেলোনার সম্ভাবনার সূর্য প্রথমার্ধেই অস্তমিত হয়েছিল।