জাতীয়

নরসিংদীতে ৫ শত ২৮ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা নদী খননের নামে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে

 রাজু মিয়া,স্টাফ রিপোর্টার:
নরসিংদীতে আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা খনন কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বস্তুত নদী খননের নামে সরকারি কোটি কোটি টাকা লুটপাটের মহোৎসব চলছে। যেনতেন ভাবে ও ব্যাপক কারচুপির মধ্য দিয়ে এসব নদীর খনন কাজ হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
প্রতিটি ইউনিয়ন ভিত্তিক সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, নরসিংদী জেলার সাবেক পানি উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হিরু নদী খননের কাজে নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুন:খননের কাজে ৫শত ২৮ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করলে
এ সুযোগকে কাজে লাগাতে অসাধু কিছু বালু ব্যবসায়ীরা নদীর পাশে থাকা জমি ভাড়া নিয়ে ফসলী জমি প্রতি কাঠা বাবদ ২০ থেকে ৩০ টাকার বিনিময়ে ১ বছরের চুক্তি করেন। চুক্তি করার পর পরই এই জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করে দেয় ইটভাটাগুলোতে। তারপর এই গর্তগুলো ভরাট করতে ঘুষবাণিজ্যের মাধ্যম ব্যবহার করে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, দরপত্রে যেখানে এসব নদীগুলোতে ১৬০ থেকে ১৮০ ফিট খনন কাজ করার কথা সেখানে ওই এলাকায় ৮০ ফিট বা তার কম খনন করা হচ্ছে
এদিকে বেলাব উপজেলা আজ ২৫ শে ফেব্রুয়ারী রবিবার আড়িয়াল খাঁ নদীর পাশে থাকা সেনাবাহিনী নদী খননের কাজের কাছে সংবাদ কর্মী গেলে নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক ড্রেজারের শ্রমিক বলেন, আমরা প্রতি ঘন্টায় ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বালু ফেলতেছি। কিন্তু এ বালু নিয়ম ছিল হতদরিদ্র ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিনা খরচে ফালানোর কথা ছিল বলে সে বলে।
পুরান্দিয়া এলাকার এক বাসিন্দা আব্দুল হাসিম অভিযোগ করে বলেন, কিছু অসাধু মহলের কারণে আমাদের কৃষি জমি সহ ধ্বংসে পরিণত হচ্ছে আমাদের ফসলী জমি। যদি আমরা একটু বালুর কথা বলি তাহলে টাকা দিলেই নাকি মিলবে বালু তিনি অভিযোগ করে বলেন।
লেবুতলা ইউপি ৩নং ওয়ার্ড সদস্য লেহাজ উদ্দিন জানান, বালুতো উত্তোলন করতেছে রতন ভাইয়ের নেতৃত্বে। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন যাবত আমরা এই বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছি বলে সাফ জানিয়ে দেন।
এদিকে চর বেলাব ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হাবি মেম্বার বলেন, এই আড়িয়াল খাঁ নদী খনন কাজের নামে এলাকার দুষ্কৃতিকারীরা ড্রেজার মেশিনকে অবৈধ ঘুষ দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে। তাই আমরা যেহেতু জনগনের প্রতিনিধি কিছু বলতে গেলে আমাদের সমালোচনাটাই বেশি বাঁধে।
এদিকে নদী রক্ষা কমিটির সদস্য মোঃ হাসান মাহমুদ সংবাদ কর্মী রুদ্রকে জানান, এই নদীগুলো প্রায়ই মৃত্যুর পথে জড়ে যাচ্ছিল। আজ সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নের স্বার্থে নদী খননটি করায় জনসাধারণের আস্থা বিরাজ করছিল।
কিন্তু এই সিন্ডিকেট গুলো বিভিন্ন রাজনীতি মূলক কৌশল ও ঘুষের বিনিময়ে প্রভাব বিস্তার করে কৃষকদের জিম্মি করে তাদের ফসলী জমি হাতিয়ে নিয়ে যে বালু বিক্রি করা তাহা সম্পূর্ন অনৈতিক বলে মনে করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *