দেশজুড়ে বাংলাদেশ

দেশজুড়ে চামড়ার বাজারে ধস

সমাধান ডেস্ক : ধস নেমেছে চামড়ার বাজারে। ব্যবসায়ীরা বলেছেন গত ১০ বছরেও এবারের মত এমন ধস নামেনি।

মহল্লায় ঘুরে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছেন খুচড়া ব্যবসায়ীরা। যে দামে চামড়া কিনেছেন, আড়তে নিয়ে তার অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হয়েছে। আড়তদারদের চামড়া কেনা প্রায় শেষ। শুক্রবার আর তেমন একটা কেনাবেচা হচেছ না। কোরবানির পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত পোস্তার বাজারে এক লাখ থেকে সোয়া লাখ পশুর চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। কেনার পর চামড়ায় লবণ মাখিয়ে গুদামে রাখা হয়েছে। এরপর তা যাবে সাভারে ট্যানারি মালিকদের কাছে।

আড়তদার শামসুদ্দিন জানান, তিনি ছয়’শ থেকে এগার’শ টাকা দরে আড়াই হাজার চামড়া কিনেছেন। প্রতিটি চামড়ায় লবন মাখানো ও শ্রমিক খরচ ধরে চামড়া প্রতি মোট আড়াইশ টাকা খরচ হয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে না পারলে লোকসানে পড়বেন। তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছরে চামড়ার দর এতো নামতে দেখি নি।’

কামরুল নামের চামড়ার এক মৌসুমি ব্যবসায়ী জানান, ঈদের দিন দেড়শ চামড়া কিনেছিলেন। কিন্তু চামড়া বিক্রিই করতে পারছিলেন না। পরে কম দামে মোটা অংকের লোকসানে বিক্রি করে দিয়েছেন। এরপর আর তিনি চামড়া কেনেন নি।

পোস্তার এক আড়তদার জানান, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পাড়া-মহল্লা থেকে বেশি দামে চামড়া কেনাতেই বিপত্তি হয়েছে। এবছর চামড়ার সর্বোচ্চ মূল্য প্রতি বর্গফুট ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই হিসাবে প্রতি বর্গফুট চামড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা হিসেবে কিনতে হচ্ছে। কারণ, এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ আছে। আগে হাজারীবাগে পৌঁছে দিলে হতো। এখন নিতে হবে সাভারে। সেক্ষেত্রে পরিবহন খরচও বেড়েছে। সেই দিকে খেয়াল রেখেই চামড়া কেনা হয়েছে।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম কম। তার প্রভাব দেশের বাজারেও পড়েছে।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে চামড়ার দাম কমায় সরকার দেশের বাজারেও দাম কিছুটা কমিয়েছে। কিন্তু অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী বিষয়টি বোঝেনি। তারা আড়তদারদের জন্য নির্ধারিত করা দামে চামড়া কিনেছে। ফলে তারা ক্ষতির শিকার হয়েছেন।’

এবার ঢাকায় লবনযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৪৫-৫০ টাকা নির্ধারণ হয়। আর ঢাকার বাইরে নির্ধারণ করা হয় প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। অন্যদিকে সারা দেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮-২০ টাকা এবং বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৩-১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

গতবছর ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় সংগ্রহ করেন। এছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া ২০-২২ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৫-১৭ টাকায় সংগ্রহ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *