দেশজুড়ে

‘মসজিদের কলাম নির্মাণের সময় গ্যাসের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়’

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গঠিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের গঠিত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জমা দেবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মসজিদ বর্ধিত করতে কলাম নির্মাণের সময় গ্যাসের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেই ক্ষতিগ্রস্ত লাইনের লিকেজ দিয়ে গ্যাস বের হয়ে বিস্ফোরণ ঘটে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির এক সদস্য রাইজিংবিডিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিকেল সাড়ে ৩টায় কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবে। এরপর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

কমিটি প্রতিবেদনে গ্যাস লিকেজের জন্য ভবন নির্মাণকাজকে দায়ী করেছে। এতে বলা হয়েছে, মসজিদ নির্মাণের সময় অনুমতি নেওয়া হয়নি। মসজিদ উত্তর দিকে বর্ধিত করতে চার নম্বর কলামটি তৈরির সময় গ্যাসের পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে সেই লাইন মাটির সংস্পর্শে এসে এতে ছিদ্র হয়। সেই ছিদ্র থেকে গ্যাস বের হয়েছে। সেখানে তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনটি নব্বইয়ের দশকে তৈরি করা।

প্রতিবেদনে কমিটির পক্ষ থেকে কয়েক দফা সুপারিশও করা হয়েছে।

কমিটির সদস্য জানিয়েছেন, তদন্তের সময় মসজিদ কমিটির সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তারা জানতে পেরেছেন, এই মসজিদ নির্মাণের জন্য তাদের কাছে সিটি কর্পোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ, কিংবা রাজউক কারোর অনুমোদনপত্র নেই। তাছাড়া মসজিদটিতে বিদ্যুতের দুটি লাইন রয়েছে, যার একটি অবৈধ। মূল লাইনে বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প লাইনটি ব্যবহার করা হতো।

বিদ্যুৎ যাওয়ার পরে যখন লাইন বদল করা হয়েছে, তখন স্পার্ক করে তা মসজিদ ভর্তি গ্যাসে মিশে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে কমিটি মনে করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কমিটির প্রধান তিতাস গ্যাসের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিষয়ক জি এম ওয়াহাব তালুকদার বলেন, কমিটির প্রতিবেদন সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) এটি জমা দেওয়া হবে। এরপর আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কমিটি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের হাতে প্রতিবেদন তুলে দেবেন। এরপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিবেদন সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানাবেন তিনি।

এদিকে, মসজিদটির মেঝের নিচে গ্যাস লাইন ছিদ্র হয়ে অনেক দিন ধরে গ্যাস বের হচ্ছিল এবং তা ঠিক করতে তিতাস গ্যাসের কর্মচারীরা ঘুষ চেয়েছিলেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়েও তদন্ত করা হচ্ছে।

বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস গ্যাসের চারজন কর্মকর্তা এবং চারজন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে বায়তুস সালাত মসজিদে এই বিস্ফোরণে এখনো পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি আছেন পাঁচ জন। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *