জাতীয়

আলুর দাম বেঁধে দিলো সরকার, ডিসিদের নজরদারির নির্দেশ

বাজারে আলুর লাগাম টেনে ধরতে পাইকারি ২৫ ও ভোক্তা পর্যায়ে (খুচরা মূল্য) ৩০ টাকা কেজি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এ দামে বিক্রি নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) চিঠি দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে সম্প্রতি দেশের সব জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, গত মৌসুমে প্রায় এক কোটি ৯ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। আর দেশে মোট আলুর চাহিদা প্রায় ৭৭ লাখ ৯ হাজার টন। এতে দেখা যায় যে, গত বছর উৎপাদিত আলু থেকে প্রায় ৩১ লাখ ৯১ হাজার টন উদ্বৃত্ত থাকে। কিছু পরিমাণ আলু রফতানি হলেও ঘাটতির সম্ভাবনা একেবারেই কম।

মৌসুমে যখন হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে তখন প্রতি কেজির মূল্য ছিল সর্বোচ্চ ১৪ টাকা। কেজিপ্রতি আলুতে হিমাগার ভাড়া বাবদ তিন টাকা ৬৬ পয়সা, বাছাই খরচ ৪৬ পয়সা, ওয়েট লস ৮৮ পয়সা, মূলধনের সুদ ও অন্যান্য খরচ বাবদ ২ টাকা ব্যয় হয়। অর্থাৎ এক কেজি আলুর কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ের সর্বোচ্চ ২১ টাকা খরচ পড়ে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, সংরক্ষিত আলুর কোল্ডস্টোরেজ পর্যায়ে বিক্রয় মূল্যের ওপর সাধারণত ২ থেকে ৫ শতাংশ লভ্যাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ৪ থেকে ৫ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ যোগ করে ভোক্তার কাছে আলু বিক্রি করা যুক্তিযুক্ত। এক্ষেত্রে হিমাগার পর্যায় থেকে প্রতি কেজি আলু ২৩ টাকা মূল্যে বিক্রি করলে আলু সংরক্ষণকারীর ২ টাকা মুনাফা হয় ।

অন্যদিকে, আড়ৎদারি, খাজনা ও লেবার খরচ বাবদ ৭৬ পয়সা খরচ হয়। সেই অনুযায়ী পাইকারি মূল্য (আড়ৎ পর্যায়) ২৩ টাকা ৭৭ পয়সার সঙ্গে মুনাফা যোগ করে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা দেওয়া যেতে পারে।

একজন চাষির প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ ৮ টাকা ৩২ পয়সা হয়েছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, এ অবস্থায় হিমাগার পর্যায় থেকে প্রতি কেজি আলুর মূল্য ২৩ টাকা, পাইকারি/আড়তের মূল্য ২৫ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩০ টাকা হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বাজারে দেখা যাচ্ছে যে, প্রতি কেজি আলু খুচরা পর্যায়ে ৩৮ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা অযৌক্তিক ও কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তাই কোল্ডস্টোরেজ পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ২৩ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ২৫ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৩০ টাকা মূল্যে খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করবেন। এ মূল্যে কোল্ডস্টোরেজ, পাইকারি বিক্রেতা এবং ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা বিক্রেতাসহ তিনপক্ষই যাতে আলু বিক্রয় করেন, এজন্য কঠোর মনিটরিং ও নজরদারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডিসিদের অনুরোধ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *