সমাধান ডেস্ক:
দেশের পাঁচ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে চাঙা হয়ে উঠেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যেই তিন আসনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে। আর দলের নেতাকর্মীরাও নির্বাচনি মাঠে নেমে পড়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৭ অক্টোবর ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনে ভোট হবে ইভিএমে। আগ্রহী প্রার্থীরা ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ২০ সেপ্টেম্বর বাছাইয়ের পর ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে। এর আগে পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচন হবে ২৬ সেপ্টেম্বর।
পাবনা-৪ সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মো. নুরুজ্জামান বিশ্বাস, ঢাকা-৫ আসনে মনিরুল ইসলাম মনু ও নওগাঁ-৬ আসনে মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল।
তবে, এখনো ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করায় আওয়ামী লীগও প্রার্থী মনোনীত করেনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন উপনির্বাচনে নেতাকর্মীদের মাঠমুখী করতে আলাদা কমিটি করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। তিন আসনে কেন্দ্রীয় দুই জন করে নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আসনের দল ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করছেন তারা। করোনার সময়ে ভোটারদের কাছে কিভাবে পৌঁছানো যায়, তাদের কিভাবে ভোটমুখী করা যায়—এসব নিয়ে আলোচনা করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। একইসঙ্গে বিভিন্ন ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটিও করছেন তারা।
ঢাকা-৫ আসনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানককে প্রধান করে সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমকে। আর পাবনা-৪ আসনের নির্বাচন তদারকির জন্য সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমানকে প্রধান করে সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নওগাঁ-৬ আসনে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে প্রধান করে সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নেতাকর্মীদের মধ্যে সাজসাজ রব শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে প্রচার-প্রচারণা। পাশাপাশি ব্যানারে-ফেস্টুনে সয়লাব পুরো এলাকা। দীর্ঘদিন পর উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারও তারা রাজনীতির মাঠে নেমেছেন। এই নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক প্রাণচঞ্চল্য দেখা গেছে।
পাবনা ৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুজ্জামান বিশ্বাস রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রোগ্রাম করা হচ্ছে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের তত্ত্বাবধানে এসব হচ্ছে। নৌকার পক্ষে যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, আমার রাজনৈতিক জীবিনে এমনটা আর কখনোই দেখিনি।’
তবে, প্রচার-প্রচারণা শুরু না হলেও নওগাঁ-৬ আসনে থেমে নেই নির্বাচনি আমেজ। সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরোয়া মিটিংগুলো সেরে নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এই আসনের দলীয় প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর নেতাকর্মীরা উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠে নেমেছেন। বিষয়টি নিয়ে তারা বেশ উচ্ছ্বসিতও।’
ঢাকা-৫ উপনির্বাচনের করণীয় নিয়ে বৈঠক শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতা—জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। তারা নির্বাচনের জন্য দ্রুত ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটিগুলো গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘করোনার কারণে এবারের উপনির্বাচনগুলো আবেদন একটু অন্যরকম। ভোটারদের কাছে যাওয়া ও তাদের ভোটকেন্দ্রমুখী করার বিষয় রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমাদের এগোতে হবে।’
দ্রুত ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করার নির্দেশ দিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নানক বলেন, ‘কমিটি করার ক্ষেত্রে সম্পর্কের বিষয় বিবেচনায় না নিয়ে যারা কাজ করবেন, তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’ নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা ও জনসংযোগের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।