মো: নজরুল , মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কোভিড-১৯ করোনা মহামারীর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তান্ডবে কুমিল্লার মুরাদনগরের পরিস্থিতি যখন অবনতির দিকে ঠিক তখনি তা মোকাবেলায় দ্রæত সময়ের মধ্যে বেশ কিছু ব্যতিক্রমী ও জনবান্ধব উদ্যোগ গ্রহন করে প্রশংসায় ভাসছে কুমিল্লা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন (এফসিএ)।
উপজেলার সর্বস্তরের জনগনের সেবায় যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম করোনায় আক্রান্তদের পরিবারের জন্য খাদ্য সামগ্রী, তাদের চিকিৎসায় অক্সিজেন, ফ্রী এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, ঔষধ প্রদান এবং করোনায় মৃতদের দাফন করা। আর এসব সেবা প্রদানে খোলা হয়েছে উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরের পাশে কন্ট্রোল রুম। সেখানে রয়েছে দু’টি হট লাইন নাম্বার: ০১৭৫২১৯০৬৫২, ০১৭৪৩০২৭৫৬৯ ফোন করলেই বাড়ীতে পৌছে যায় চাহিদা মত সেবা।
এর বাইরে লকডাউন চলাকালিন সময় উপজেলার সকল এতিমখানা ও মাদ্রাসা সহ নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে দেয়া হয়েছে খাদ্য সামগ্রী।
জানা যায়, মুরাদনগরে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমন শুরুর পর এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিজস্ব অর্থায়নে ১.৩৬-২৪টি, ৭.৫-১৫টি, ৯.৮-৬টিসহ মোট ৪৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করেন। নতুন করে চালু করেন ২০ বেডের একটি করোনা ইউনিট। করোনায় আক্রান্ত ও অসহায়দেয় দ্রæত সেবা দেয়ার লক্ষে মুরাদনগর উপজেলা ও বাঙ্গরা বাজার থানা যুবলীগ, কৃষকলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু সদস্যদের নিয়ে ৩টি টিম গঠন করে আলাদা আলাদা কার্যক্রম শুরু করেন। যার মধ্যে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহŸায়ক মোঃ রুহুল আমিন ও বাঙ্গরা বাজার থানা যুবলীগের বিল্লাল হোসেনের নেতৃত্বে নেতা কর্মীদের মাধ্যমে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাফন করা, জরুরী প্রয়োজনে বাড়িতে গিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করা এবং রোগীদের হাসপাতালে নেয়ার জন্য দু’টি ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস পরিচালনা করছেন। পাশাপাশি স্থানীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে বিনা খরচে সাধারন মানুষের করোনা টিকার নিবন্ধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে কৃষকলীগের আহ্বায়ক আবু মুসা আল কবির ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো: হাসানের নেতৃত্বে একটি টিম মুরাদনগর ও বাঙ্গরায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেয়াসহ বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী, ঔষধ ও ফলমূল পৌছে দিচ্ছেন।
এ ছাড়াও ছাত্রলীগের সভাপতি সফিকুল ইসলাম তুহিন ও আবুল কাশেমের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা পরীক্ষার ইউনিটে ফরমপূরণ ও স্বাস্থ্য বিধি মানতে সহযোগীতা করছেন। পাশাপাশি টিকা কেন্দ্রে সাধারন মানুষের স্বাস্থ্য বিধি বজায় রাখা সহ তাদের সুশৃংখলভাবে টিকা গ্রহনে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে সাংসদ ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন প্রতিদিন নিজে ফোন করে সকল নেতাকর্মীসহ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে নিবিড় পর্যবেক্ষন করছেন। প্রতিদিন আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতায় বিতরণ করা হচ্ছে মাস্ক ও স্যানিটাইজার।
এর আগেও ২০২১সালে প্রথম করোনা সংক্রমন শুরুর পরে করোনা প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। তখন মুরাদনগরের সংসদ সদস্য তার ব্যাক্তিগত অর্থায়নে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কর্মহীন দরিদ্র ও অসহায়দের মাঝে প্রায় ২কোটি টাকার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন। করোনা রোগীদের অক্সিজেন সংকটের কথা বিবেচনা করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দশ বেডের একটি সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করেন। করোনা রোগীদের হাসপাতালে যাতায়াতের সুবিধার্থে দুইটি ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স চালু করেন। প্রথম ধাপের করোনা পরবর্তী সময়ে উপজেলার মাদ্রাসা ও এতিমখানা গুলোয় যখন খাদ্য সংকট দেখা দেয় তখন এমপির নিজস্ব তহবিল থেকে কৃষকলীগের আহ্বায়ক আবু মুসা আল কবির ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো: হাসানের মাধ্যমে শতাধিক মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দুইধাপে প্রায় ৯০লক্ষ টাকার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। করোনা মহামারীর মধ্যে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত অর্থায়নে এমন উদ্যোগের প্রশংসা করছেন উপজেলার সুশীল সমাজ ও সুবিধাভোগীরা।
এব্যাপারে সাংসদ ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন (এফসিএ) বলেন করোনা মহামারী থেকে শুরু করে সকল দুর্যোগে উপজেলার জনসাধারনের সেবায় আমাদের এই টিম গুলো কাজ করে যাচ্ছে। আগামী দিনগুলোতেও উপজেলাবাসীর সকল প্রকার সেবা নিশ্চিত করতে আমার সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।