ক্রিকেট খেলা

ফিরেই চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই!

স্পোর্টস ডেস্ক : চেন্নাই সুপার কিংসের শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হলো এগারতম ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) আসর। প্রায় দুই মাস ধরে চার-ছক্কা আর অসাধারণ সব ক্রিকেটিয় তান্ডবে মেতে ছিল ভারতসহ পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। গতকাল সাকিব আল হাসানের সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৮ উইকেটে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে তৃতীয় শিরোপা জিতে নেয় চেন্নাই।
ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে আগের দুই মৌসুম নিষিদ্ধ ছিল চেন্নাই। ধোনির অধীনেই প্রত্যবর্তনটা হলো শিরোপা উৎসব দিয়ে। এর আগে ২০১০ ও ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়ন দল তারা। তিনবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের সঙ্গে যৌথভাবে আইপিএলের সফলতম দল এখন চেন্নাই সুপার কিংসও।
মুম্বাইয়ের ফাইনালে চেন্নাইয়ের সামনে লক্ষ্য ছিল ১৭৯ রান। শুরুতে ফাফ ডু প্লেসিসকে হারালেও সাবেক অস্ট্রেলিয়া ব্যাটসম্যান শেন ওয়াটসনের অপরাজিত শতকে ৯ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌছে যায় মাহেন্দ্রসিং ধোনির দল। ৫৭ বলে ১১ চার ও ৮ ছক্কায় ১১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন ওয়াটসন। ১১ বছরের আইপিএল ফাইনালের ইতিহাসে এটি-ই প্রথম সেঞ্চুরির রেকর্ড। চলতি আসরে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। সব মিলে এবারের আসরে চারটি শতক দেখেছে ক্রিকেট ভক্তরা। এর তিনটিই এসেছে চেন্নাইয়ের কাছ থেকে; বাকিটা আম্বাতি রাইডুর। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে অপর সেঞ্চুরি ইনিংসটি আসে ক্যাবিরীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইলের ব্যাট থেকে।
এবারের আসরে হায়দরাবাদের হয়ে প্রতিটা ম্যাচেই ছিলেন সাকিব। আহমরি তেমন কিছু করতে না পারলেও বাংলাদেশি অল রাউন্ডারের কাছ থেকে প্রাপ্য সেবাটা ঠিকই পেয়েছে হায়দরাবাদ। ১৭ ম্যাচে ১৪ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেন ২৩৯ রান। দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এবারের আসরে ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু পাঁচে থেকে আসর শেষ করে তার দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
হায়দরাবাদের হয়ে বল হাতে এদিন কেউই সফল হতে পারেননি। রশিদ খান ও ভুবনেশ্বর কুমারের ৮ ওভারে চেন্নাই ৪১ রান নিলেও বাকিরা ছিলেন খরুচে। ১ ওভারে ১৫ রান দিয়ে আর বোলিংয়ে আসেননি সাকিব। অথচ পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে চেন্নাইয়ের রান ছিল ১ উইকেটে ৩৫। রানের খাতা খুলতেই ১০ বল লাগে ওয়াটসনের। এরপরই খোলস থেকে বের হন ওয়াটসন। বদলাতে থাকে ম্যাচের রং।
উনবিংশ ওভারে কার্লোস ব্রেথওয়েটকে বাউন্ডারি ছাড়া করে দলের জয় নিশ্চিত করেন চেন্নাইয়ের সর্বোচ্চ (৬০২) রান সংগ্রাহক রাউডু। তৃতীয় উইকেটে ওয়াটসন-রাইডু জুটি অবিচ্ছিন্ন থাকে ৪৮ রানে। এর আগে সুরেশ রাইনাকে (২৪ বলে ৩২) নিয়ে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক ১১৭ রানের জুটি গড়েন ওয়াটসন।
হায়দরাবাদের ইনিংসে ফিফটি ইনিংস নেই একটিও। দুটি চল্লিশোর্ধো ইনিংস আসে ইউসুফ পাঠান ও আসরের সর্বোচ্চ (৭৩৫) রান সংগ্রাহক অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ব্যাট থেকে। এছাড়া সাকিব আল হাসান ও কার্লোস ব্রাফেটে ক্যামিওতে লড়াইয়ের পুঁজি পায় হায়দরাবাদ। ১৫ বলে ২৩ রান করে আউট হন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার। নবম ওভারে দলীয় ৬২ রানে শিখর ধাওয়ান দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরে যাওয়ার পর চার নম্বরে নামেন সাকিব। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুখোমুখি প্রথম বলেই রবীন্দ্র জাদেজাকে কাট শর্টে চার হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলেন। জাদেজার পরের ওভারে পরপর দুই বলে হাঁকান ছক্কা ও চার। কাউ কর্নার দিয়ে ছক্কা হাঁকানোর পর লং অন দিয়ে মারেন চার। এরপর অবশ্য আর বাউন্ডারি মারতে পারেননি সাকিব। ১৬তম ওভারে ডোয়াইন ব্রাভোর ফুলটস বলে কভারে সুরেশ রায়নাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ১৫ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ২৩ রানের ইনিংসটি সাজান সাকিব। তবে শেষ পর্যন্ত ইউসুফ পাঠান ২৫ বলে ৪৫ (৪ চার, ২ ছক্কা) ও কার্লোস ব্রাফেট ১১ বলে ২৫ রানে (৩ ছক্কা) অপরাজিত ছিলেন। উইলিয়ামসন ৩৬ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় করেন সর্বোচ্চ ৪৭ রান। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৮ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় হায়দরাবাদ। কিন্তু ওয়াটসনের দিনে এই রানও যে বড্ড মামুলি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *