আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ওযুধের দোকানে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। পরে হাসপাতালের মূল ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৮টার দিকে মেডিক্যাল কলেজের এমসিএইচ বিল্ডিংয়ের ওষুধের কাউন্টারে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৮টার দিকে হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষী এবং রোগীর পরিজনরা প্রথম ধোঁয়া দেখতে পান এমসিএইচ বিল্ডিংয়ে। আগুনের উৎস বোঝার আগেই গাঢ় কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতাল জুড়ে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে রোগী এবং তাদের আত্মীয়দের মধ্যে। এমসিএইচ বিল্ডিংয়ে রয়েছে কার্ডিওলজি, আইসিইউ, পুরুষ এবং নারীদের মেডিসিন বিভাগের ওয়ার্ড রয়েছে।
হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মীরা প্রথমে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের চারটি গাড়ি পৌঁছায়। পরে পরিস্থিতি প্রকট হলে আরো ছয়টি গাড়ি আনা হয়। কিন্তু ততক্ষণে গোটা হাসপাতাল চত্বর প্রচণ্ড ধোঁয়ায় ঢেকে যায়।
সেই ধোঁয়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঢোকা শুরু হয়। অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করেন রোগীরা। এদের অনেকেরই অক্সিজেন চলছিল। তড়িঘড়ি হাসপাতাল ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা রোগীদের একটা বড় অংশকে ওয়ার্ড থেকে নিচে নামিয়ে আনেন। এই কাজে হাতে হাত লাগান রোগীদের স্বজনরাও।
রোগীদের নামিয়ে আনার সময় অনেক ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত স্ট্রেচারও পাওয়া যায়নি। চাদরে করে রোগীদের নিয়ে আসতে দেখা যায়। প্রথম অবস্থায় আইসিইউতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কিছু রোগীকে। সেখানে স্থান সংকুলান না হলে তাদের খোলা আকাশের নিচে মাটিতে চাদর পেতে রাখা হয়।
আগুন লাগার পর ইতোমধ্যে ২৫০ জন্য রোগীকে হাসপাতাল থেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। খালি করা হচ্ছে গোটা ভবনটি। ওই ওষুধের কাউন্টারের পাশেই রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের গোডাউন। সেখানে যাতে আগুন না পৌঁছাতে পারে সে চেষ্টায় তৎপর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
ওষুধের দোকানের শাটার ভেঙে, কাচ ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায় ফায়ার সার্ভিস। ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
এজরা বিল্ডিংয়ের পিছন দিকে খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় আপাতত রেখে দেওয়া হয়েছে রোগীদের। যাতে ধোঁয়ায় রোগীদের কোনোরকম শ্বাসকষ্ট না হয়।
প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, এমসিএইচ বিল্ডিংয়ে কোনো ওষুধের কাউন্টারে আগুন লেগেছে। বেশি ধোঁয়া থাকায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরাও ভেতরে ঢুকতে পারছিলেন না। পরে গ্যাস মাস্ক পরে তারা বিল্ডিংয়ের ভেতরে প্রবেশ করেন। এখনো আগুন নেভানোর কাজ চলছে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরাও।
তথ্য : জি নিউজ ও এনডিটিভি