করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে বাংলাদেশের জন্য ঋণ মঞ্জুর করতে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একই সঙ্গে তিনি ঋণের অর্থ দ্রুত ছাড় করার আহ্বান জানিয়েছেন বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে গত ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় একটি ভার্চুয়াল সভা হয়। এ সভায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে ছিলেন অর্থ সচিব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব। বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শ্যেফার ও কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন।
সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অব্যাহত সহযোগিতার জন্য বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানান। তিনি করোনার টিকা কেনার জন্য ঋণ সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাভুক্ত (আইডিএ) দেশগুলোর মধ্যে জনসংখ্যাধিক্যের দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশের জন্য দ্রুত ঋণ মঞ্জুরের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হার্টউইগ শ্যেফারের সহযোগিতা কামনা করেন।
অর্থমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন। তিনি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশকে ১০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন। বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়, বাংলাদেশের বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচকভাবে দেখা হবে।
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য করোনার টিকা আমদানি, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিতরণের জন্য অতিরিক্ত ৫০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা চাওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত ‘কোভিড-১৯ রিকভারি অ্যান্ড রেসপন্স’ প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ৫০ কোটি ডলারের মধ্য থেকে চলতি অর্থবছরে জরুরি ভিত্তিতে অন্তত ২৫ কোটি ডলার ছাড় করার জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
করোনাজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের শ্রমবাজার, আর্থিক ও সামাজিক খাত সচল রাখতে চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের ‘প্রোগ্রামেটিক জবস ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট (ডিপিসি)’ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় কিস্তির ২৫ কোটি মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা হিসেবে দ্রুত ছাড় করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের প্রয়োজনীয় শর্তগুলোর অধিকাংশই ইতোমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। বাকি শর্তগুলোও পূরণ করা সম্ভব হবে বলে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার সভায় অবহিত করেন।
সভায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন জানান, আইডিএ-১৮ এর আওতায় বাংলাদেশ কোর আইডিএ থেকে পাওয়া ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এসইউএফ থেকে পাওয়া আরো ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সক্ষমতা দেখিয়েছে, যা আইডিএ-ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।
তিনি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সক্ষমতা অর্জন, আইডিএ-১৯ এর আওতায় বাংলাদেশকে গত বছরগুলোর তুলনায় বেশি বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান জানান।