ক্রীড়া ডেস্ক: ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বুধবার রাত ১২টায় মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়া। ৮১ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।
স্কোর: ইংল্যান্ড ১ : ২ ক্রোয়েশিয়া
পারল না ইংল্যান্ড, হাসল ক্রোয়েশিয়া: নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা ১-১ গোলে সময়তায় থাকার পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের প্রথম অর্ধের ১৫ মিনিটেও গোল পায়নি কোনো দল। পরবর্তীতে ১৫ মিনিটে কাজের কাজটা করে ক্রোয়েশিয়া। মানজুকিচের অসাধারণ গোলে জয় পায় ক্রোয়েশিয়া। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে ফাইনালে উঠল ক্রোয়েশিয়া। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স।
মানজুকিচের গোলে এগিয়ে গেল ক্রোয়েশিয়া: ইভান পেরিসিচের হেড থেকে ডি বক্সের ভেতরে বল পান মারিও মানজুকিচ। ম্যাচের তখন ১০৯ মিনিট। বাম পায়ের শট নিয়ে ইংল্যান্ডের গোল রক্ষককে বোকা বানান মানজুকিচ। এর আগে একবার মানজুকিচের শট ফিরিয়েছিলেন ইংলিশ গোল রক্ষক। কিন্তু এবার পারলে না।
অতিরিক্ত সময়ে দুই দলের মহারণ: নির্ধারিত ৯০ মিনিটে অমীমাংসিত দুই দলের লড়াই। চলছে অতিরিক্ত সময়ের ম্যাচ। দুই অর্ধে ১৫ মিনিট করে মোট ৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময় পাবে দলগুলো। এরপরও ফল না হলে টাইব্রেকারে গড়াবে ম্যাচ। প্রথমার্ধে লিড পেয়েছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে গোল শোধ দেয় ক্রোয়েশিয়া। ১-১ গোলে নির্ধারিত সময়ের লড়াই অমীমাংসিত থাকে।
গোল শোধ দিল ক্রোয়েশিয়া: ৬৮ মিনিটে গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে ম্যাচে ফেরালেন ইভান পেরিসিচ। সিমে ভারসালজিকোর ক্রস থেকে ডি বক্সের ভেতরে পা লাগিয়ে ইংল্যান্ডের রক্ষণদূর্গ ভাঙেন পেরিসিচ। জাতীয় দলের হয়ে এটি তার ২৮তম এবং চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় গোল।
লিড নিয়ে বিরতিতে ইংল্যান্ড: ট্রিপায়ারের গোলে ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। প্রথমার্ধে তারা ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে গেছে। গোল হজমের পর একাধিক সুযোগ সৃষ্টি করেছিল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি মড্রিচরা। পরের ৪৫ মিনিটে পারবেন তো?
শুরুতেই এগিয়ে ইংল্যান্ড: ডেলে আলিকে ডি বক্সের বাইরে ফাউল করায় ২০ গজ দূর থেকে পঞ্চম মিনিটে ফ্রি-কিক পায় ইংল্যান্ড।কিরিন ট্রিপায়ারের ডানপায়ের বাঁকানো শটে কিছু করার ছিল না ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষকের। তার শট খুঁজে নেয় জাল। জাতীয় দলের হয়ে নিজের প্রথম গোল করে শুরুতেই লায়ন্সদের উল্লাসে ভাসান ট্রিপায়ার।
মুখোমুখি লড়াই: এর আগে সাতবার দু’দলের দেখা হয়েছে। তার মধ্যে চার বার জিতেছে ইংল্যান্ড। বাকি দু’বার ক্রোয়েশিয়া, একবার ড্র হয়েছে। শেষ বার বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ৫-১ হারিয়েছিল ক্রোয়েশিয়াকে।
লুকা মড্রিচ না হ্যারি কেন? বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ গোল করেছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হ্যারি কেন। পিছিয়ে নেই লুকা মড্রিচ। নিজে গোল করেছেন। সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছেন। আজ দুজনের কাঁধে দুই দলের দায়িত্ব। দুজনের সুযোগ আছে অমরত্বের স্বীকৃতি পাওয়ার। কে হবেন নায়ক, লুকা মড্রিচ নাকি হ্যারি কেন?
যেভাবে সেমিফাইনালে দুই দল: গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের তিনটিতেই জয় পায় ক্রোয়েশিয়া। দ্বিতীয় ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে হারায় ৩-০ ব্যবধানে। প্রি-কোয়ার্টারে টাইব্রেকারে ডেনমার্ককে ৩-২ গোলে হারিয়ে তারা উঠে কোয়ার্টারে। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে রাশিয়াকেও টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারায় ক্রোয়েশিয়া। ইংল্যান্ড গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে জয় পেলেও হেরে যায় তৃতীয় ম্যাচে বেলজিয়ামের বিপক্ষে। শেষ ষোলোতে কলম্বিয়াকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে শেষ আটে উঠে ইংল্যান্ড। কোয়ার্টারে তাদের সামনে বাধা হতে পারেনি সুইডেন। ২-০ গোলে জিতে হ্যারি কেনরা।
৫২ বছরের আক্ষেপ পূরণ হবে তো? ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ জিতেছিল। এরপর ৫২ বছরে একবারও ফাইনাল খেলার সুযোগ হয়নি লায়ন্সদের। রাশিয়ায় কি তাদের ৫২ বছরের আক্ষেপ দূর হবে?
ক্রোয়েশিয়ার প্রথম? স্বাধীন দেশ হিসেবে ক্রোয়েশিয়া প্রথম বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে ১৯৯৮ সালে। সেবারই উঠে যায় সেমিফাইনালে। প্রথমবারের মতো তাদের সামনে ফাইনালের হাতছানি।