মোঃ নজরুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগরে সরকারের উন্নয়নের পক্ষে কথা বলায় দফায় দফায় যুবককে মারধর করে বসত বাড়ীতে ঢুকে লুটপাট ও বাড়ীঘর ভাংচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় বাদীকে প্রভাবিত করে লিখিত অভিযোগে সরকারের উন্নয়নের কথা বাদ দিয়ে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ উঠেছে ওসি আজিজুল বারি ইবনে জলিলের বিরুদ্ধে। অপরদিকে ঘটনার পর অভিযুক্তরা আগাম ঘোষনা দিয়ে ওই ঘটনার স্বাক্ষীর বাবার সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চুরি করার অভিযোগ উঠছে।
আহত যুবক রহমত উল্যাহ (১৯) উপজেলার কামাল্লা ইউনিয়নের নেয়ামতপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের হেলাল মিয়ার ছেলে। রবিবার (২২ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় নেয়ামতপুর গ্রামের খেলার মাঠে ও রাত ৮টার দিকে ভূক্তভোগীর নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার নেয়াতপুর গ্রামের ভূক্তভোগী রহমত উল্যাহ ও একই গ্রামের মোসলেম মিয়ার ছেলে অভিযুক্ত শান্ত (২৫)সহ ৮-১০ জন যুবক মাঠে ফুটবল খেলতে গেলে শান্ত তার বাড়ীর রাস্তা ও সরকারের উন্নয়ন নিয়ে গাল মন্দ করতে থাকে। এসময় পাশে থাকা রহমাত উল্যাহ চলমান মুরাদনগর-রামচন্দ্রপুর সড়কের সংস্কার কাজ ও বিভিন্ন উন্নয়ন নিয়ে সরকারের পক্ষে কথা বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে শান্তর নেতৃত্বে ৪-৫ জন রহমত উল্যাহকে কিল ঘুষি মেরে, পরে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। একই দিন সন্ধার পর শান্ত ও তার চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম (২২) সহ ৮/৯ জন রহমত উল্যাহর বসত বাড়ীতে ঢুকে দরজা ভেঙ্গে রহমত উল্যাহকে বেধরক পিটিয়ে ফোলা জখম করাসহ বাড়ীঘরে লুটপাট এবং ভাংচুর করে। পরে তার স্বজন ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাকে উদ্ধার করে মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। অপরদিকে একই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মকবুল মিয়ার ছেলে রাব্বী এ ঘটনায় স্বাক্ষী হওয়ায় তার বাবার সিএনজি চালিত অটোরিক্সাটি গায়েব করার হুমকি দেয় অভিযুক্ত শান্ত। ওইদিন রাতেই নিজ বাড়ী থেকে চুরি হয়ে যায় মকবুল মিয়ার সিএনজি চালিত অটোরিক্সাটি।
ভূক্তভোগী রহমত উল্যাহর বাবা হেলাল মিয়া বলেন, সরকারের উন্নয়নের পক্ষে কথা বলায় আমার ছেলেকে তারা বেধরক মারধর সহ বাড়ীঘরে লুটপাট ও ভাংচুর করেছে। আমি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ নিয়ে মুরাদনগর থানায় গেলে ওসি সাহেব আমাকে বলে সামনে নির্বাচন সরকারের বর্তমানে টালমাটাল অবস্থা, এসব রাজনৈতিক বিষয় বাদ দিয়ে শুধু মারামারি ও ভাংচুরের উপর অভিযোগ নিয়ে আসেন তাহলেই নেয়া হবে। পরে বাধ্য হয়ে আরেকটি অভিযোগ লিখে থানায় জমা দিয়েছি। আমি আমার বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট ও সন্তারের মারধরের উপযুক্ত বিচার চাই।
স্থানীয় সোহাগ মিয়া বলেন, রহমত উল্যাহ খেলার মাঠে উন্নয়নের পক্ষে কথা বলায় তার বাড়ীতে ঢুকে যেভাবে ভাংচুর ও লুটপাট সহ মারধর করা হয়েছে। এতে করে গ্রামের সকল মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। এখন আবার শুনতেছি থানা পুলিশ সহযোগীতা না করে উল্টো সরকারের খারপ অবস্থার দোহাই দিয়ে মামলা ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহকারে সঠিক বিচার চাই।
সাবেক ইউপি সদস্য মকবুল মিয়া বলেন, আমার ছেলে রাব্বী এ ঘটনার লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষী হওয়ায় শান্ত ও তার লোকজন প্রকাশ্যে আমার সিএনজিটি চুরি করে নেয়ার হুমকি দেয়। পরে ওই রাতেই নিজ বাড়ী থেকে সিএনজিটি চুরি হয়ে যায়। এ বিষয়ে আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযুক্ত শান্ত বর্তমানে পলাতক রয়েছে তার ব্যবহারকৃত ০১৬২৫৭৫২৫৩২ নাম্বারটি বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল বারি ইবনে জলিল সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভূক্তভোগীরা যে অভিযোগ দিয়েছে আমি তাই গ্রহণ করেছি। এর বাহিরে আমার কিছুই জানা নেই।