সমাধান ডেস্ক: শনিবার নির্ধারিত সময় সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে বায়তুল্লাহর ৪১৯ জন মেহমান নিয়ে উড়াল দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি-১০১১। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল ও ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বিমানবন্দরে উদ্বোধনী ফ্লাইটে হজযাত্রীদের বিদায় জানান।
এ সময় বিমান পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যান ইনামুল বারী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএম মোসাদ্দিক আহমেদ, পরিচালক প্রশাসন মোমিনুল ইসলাম, ফ্লাইট অপারেশন পরিচালক ফারহাত হাসান জামিল, গ্রাহকসেবা পরিচালক আলি আহসান বাবু, মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস পরিচালক আশরাফুল আলম, জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ, হাব মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিমসহ বিমানের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
একইদিনে হজ ফ্লাইট বিজি-৩০১১ সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে, বিজি-৫০১১ বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে এবং শিডিউল ফ্লাইট বিজি-০০৩৫ রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে। নির্ধারিত সময়ে, নির্বিঘ্নে হজ ফ্লাইট পরিচালনার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকেও এ বছর যথাক্রমে ৯টি ও ৩টি হজ ফ্লাইট পরিচালিত হবে।
এ বছর হজ ফ্লাইট ও শিডিউল ফ্লাইটে মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ (ব্যালটি ও নন-ব্যালটি) জন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হজ পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে জেদ্দা যাবেন। এসব হজযাত্রীর জন্য ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে পরিবহনের জন্য বিমানের ৪টি নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত শিডিউল ফ্লাইটেও হজযাত্রীরা পবিত্র ভূমিতে যাবেন। পবিত্র হজের গুরুত্ব ও ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একটি সর্বাঙ্গ-সুন্দর হজ কার্যক্রম পরিচালনায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ বছর সৌদি সরকার নির্ধারিত বরাদ্দকৃত স্লটের বাইরে অতিরিক্ত কোনো ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি প্রদান করবে না বলে অবহিত করেছে।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর প্রায় এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এ বছর বিমানে যাবেন মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন, এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন সাত হাজার ১৯৮ জন। অবশিষ্ট ৫৬ হাজার ৪০১ জন যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। প্রথমবারের মতো হজযাত্রীদের টিকিট ক্রয় করার পর যাত্রার তারিখ পরিবর্তনে ১০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ টাকা এবং যাত্রা বাতিলের ক্ষেত্রে ২০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ টাকার বাড়তি মাসুল আদায়ের বিধান চালু করা হয়েছে। ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক ৭ ঘণ্টা।
দুই মাসব্যাপী হজ ফ্লাইট পরিচালনায় শিডিউল ফ্লাইটসহ মোট ৩৫৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে, যার মধ্যে ২৯৮ ‘ডেডিকেটেড’ এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট। ১৪ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘প্রি-হজ’-এ মোট ১৮৭টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে (ডেডিকেটেড-১৫৫ এবং শিডিউল -৩২)। পোস্ট-হজে ১৭২টি ফ্লাইট চলবে ২৭ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড-১৪৩ এবং শিডিউল -২৯)। হজ-ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা-জেদ্দা উভয়স্থানেই বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করেছে।
প্রত্যেক হজযাত্রী বিনামূল্যে সর্বাধিক ২ (দুই) পিস ৪৬ (ছেচল্লিশ) কেজি মালামাল বিমানে এবং কেবিন ব্যাগেজে ৭ (সাত) কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোনো অবস্থাতেই প্রতি প্রিস ব্যাগেজের ওজন ২৩ (তেইশ) কেজি হবে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য ৫ (পাঁচ) লিটার জমজমের পানি ঢাকা/চট্টগ্রাম/সিলেট নিয়ে আসা হবে এবং হাজী সাহেবানরা ঢাকা/চট্টগ্রাম/সিলেট ফেরৎ আসার পর তাদেরকে তা প্রদান করা হবে। কোনো অবস্থাতেই হাজীরা সাথে করে বিমানে পানি বহন করতে পারবেন না।
যেকোনো ধারালো বস্তু যেমন ছুরি, কাঁচি, নেইল কাটার, ধাতবনির্মিত দাঁতখিলান, কান পরিষ্কারক, তাবিজ ও গ্যাসজাতীয় বস্তু যেমন অ্যারোসল এবং ১০০ (এমএল)-এর বেশি তরল পদার্থ হ্যান্ড ব্যাগেজে বহন করা যাবে না এবং কোনো প্রকার খাদ্য সামগ্রী সঙ্গে নেয়া যাবে না।
বিমান কর্তৃক পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ-ফ্লাইটসমুহের চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের ন্যায় এবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজ ক্যাম্পেই সম্পন্ন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৮ জন হাজী হজ-পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সেবা গ্রহণ করেছেন।