নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শিক্ষার্থীরা আগামীকাল থেকে আন্দোলনে নামলে তার দায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিতে হবে।
রোববার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরীর সব কলেজের (সরকারি-বেসরকারি) অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের সঙ্গে জরুরি মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের বোঝাতে হবে। প্রধান শিক্ষক হয়ে যদি শিক্ষার্থীদের বোঝাতে না পারেন তাহলে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন কেন?
শিক্ষার্থীদের অবশ্যই শিক্ষকদের কথা শুনতে হবে, উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ আরো বলেন, ‘মিথ্যা গুজবে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। কোনো কোনো মহল এর সুবিধা নিতে পারে। তাই শিক্ষার্থীদের এখন ক্লাসে ফিরতে হবে, ঘরে ফিরতে হবে। তাদের দাবি সরকার মেনে নিয়েছে। দাবি বাস্তবায়নে কাজ চলছে।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তারা যে আন্দোলন করছে তা যৌক্তিক। আমরা তাদের দোষারোপ করছি না। তারা যৌক্তিক দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। শিক্ষা পরিবারের সদস্য হিসেবে আমরা তাদের একা ছেড়ে দিতে পারি না।’
‘শিক্ষার্থীরা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে, দেশের সড়কে কীভাবে শৃঙ্খলা আনা যায়। কিন্তু এভাবে দীর্ঘদিন চলতে পারে না। যাদের কাজ তাদের করতে দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের এবার ঘরে ফিরতে হবে। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের যাতে কোনো ক্ষাতি না হয় সে ব্যাপারে সরকার সজাগ রয়েছে। তাদের কোনো সমস্যা হোক সেটা আমরা চাই না’, বলেন তিনি।
সড়কে চালকরা নিয়ম মানেন না, উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সড়কে অনিয়ম চলছে। তারা (চালকরা) নিয়ম মানে না। এমনকি সড়কে যেসব গাড়ি চলে সেগুলোই ঠিক না, ফিটনেসবিহীন গাড়ির ছড়াছড়ি। এগুলো চলতে পারে না।
পরিবহন খাতে যারা কাজ করে তারা বাইরের কেউ না, উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারাও আমাদের দেশেরই জনগণ। তাদের সন্তানরাও রাস্তায় চলাচল করেন। সুতরাং এই অনুভূতি তাদের থাকা উচিত।
সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীতে বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমে শিক্ষার্থীরা নৌমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো- দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী চালককে ফাঁসি দিতে হবে, নৌপরিবহনমন্ত্রীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিড ডাম্ব (গতিরোধক) দিতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে, শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের নিতে হবে, সারা বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না এবং বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।