শিক্ষক সেজে প্রশিক্ষণ নিতে আসা কাজিয়াতল দক্ষিণপাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার নাইটগার্ড আরিফুল ইসলাম।
মোঃ নজরুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগরে ২০২৪ সালের অষ্টম ও নবম শ্রেনিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে চলছে শ্রেনি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। শুধুমাত্র শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নেয়ার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠান প্রদান ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহায়তায় শিক্ষক না হয়েও সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন নাইটগার্ড ও অফিস সহায়করা।
বুধবার সকালে উপজেলা সদরের নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের দেয়া তথ্যে হাতেনাতে ধরা পড়ে কাজিয়াতুল দক্ষিণপাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার নাইটগার্ড আরিফুল ইসলাম। এ সময়ে প্রশিক্ষণ নিতে আসা একই মাদ্রাসার অফিস সহায়ক মিজানুর রহমান সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ১০ জন শিক্ষক না হওয়ায় প্রশিক্ষণ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাজিয়াতুল দক্ষিণপাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার মাদ্রাসায় সর্বমোট সাতজন শিক্ষক রয়েছে। তাই আমি বাধ্য হয়ে নাইটগার্ড আরিফ ও অফিস সহায়ক মিজানকে দিয়ে গণিতসহ বিভিন্ন ক্লাস নিতে হয়। এই বিষয়টি আমি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে বারবার অবহিত করেছি। যেহেতু তারা ক্লাস নেয় সেজন্য অফিসকে জানিয়ে আমি তাদেরকে প্রশিক্ষণের অনুমতি দিয়েছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশিক্ষণ নিতে আসা একাধিক শিক্ষক জানান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক গোলাম মোস্তফার সাথে আঁতাত করে ঐসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগন এই ধরনের অপকর্ম করতে সাহস পেয়েছে। এটা ওনার দায়িত্ব ছিল সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করে প্রশিক্ষণের অনুমতি দেয়ার।
সহযোগিতার বিষয়টি অস্বীকার করে মুরাদনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক গোলাম মোস্তফা বলেন, আমাদের এখানে প্রায় ১২’’শ শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। শিক্ষক সংখ্যা বেশি হওয়ায় আমরা যাচাই বাছাই করতে পারিনি। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা যে তালিকা দিয়েছেন সেটির উপর নির্ভর করেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। শুরু থেকেই এ বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি। যারা শিক্ষক না হয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আমাদের স্যারেরা।
মুরাদনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী ফরিদ আহমেদ বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি নিজেও প্রতিটি প্রশিক্ষণরমে গিয়ে সকল শিক্ষকদের সতর্ক করেছি। যেসব ব্যক্তিরা শিক্ষক না হয়েও এখানে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছে তাদেরকে এবং তাদের প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুস সামাদ শিকদার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।