আন্তর্জাতিক

সরকারি কর্মকর্তাদের হাতে বন্দি উত্তর কোরীয়ার নাগরিক জীবন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টিকে থাকার জন্য উত্তর কোরীয়দের ঘুষ দিতে বাধ্য করে দেশটির কর্মকর্তারা। দুর্নীতি দেশটিতে সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে এবং নিপীড়ন এখানে ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়ে গেছে। মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

জনগোষ্ঠীর যে অংশ শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার লড়াই করছে তাদের কাছ থেকে উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা জোর করে অর্থ আদায় করে, তাদেরকে আটক ও বিচারের হুমকি দেওয়া হয়। বিশেষ করে যারা অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে নিত্য এই হুমকির মুখে পড়তে হয়।

প্রতিবেদনটি প্রকাশের কয়েক ঘন্টার মাথায় এটি উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তবে এ ব্যাপারে পিয়ংইয়ংয়ের তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

২০০৬ সাল থেকে পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির কারণে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। দুর্বল অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে দেশটির মানবিক পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। তবে জাতিসংঘ তাদের নতুন প্রতিবেদনে বলেছে, ‘অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা’সত্ত্বেও দেশটির সেনাবাহিনী অগ্রাধিকারভাবে তহবিল পেয়ে যাচ্ছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়খ হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বলেছেন, ‘আমি উদ্বিগ্ন যে, পারমাণবিক ইস্যুতে অব্যাহত মনোযোগের কারণে কোটি কোটি উত্তর কোরীয়র ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির দিক থেকে নজর সরে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘খাদ্য, স্বাস্থ্য,আশ্রয়, কর্ম, চলাচলের স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতার অধিকার বৈশ্বিক ও হস্তান্তরের অযোগ্য। কিন্তু উত্তর কোরিয়ায় তাদেরকে প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার সামর্থ্য থাকতে হয়।’

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘টিকে থাকার জন্য লড়াইরত একটি জনগোষ্ঠীকে গ্রেপ্তার, বন্দি ও বিচারের  হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় করছে সরকারি কর্মকর্তারা।’ ঘুষ এখানে ‘শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার চেষ্টা করা লোকদের নিত্যদিনের বিষয়।’

উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে আসা ২১৪ জনের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এদের অধিকাংশ রেয়াঙ্গাগাং ও নর্থ হ্যামগিয়ং প্রদেশ থেকে পালিয়ে আসা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই পালিয়ে আসাদের একজন বলেছেন, ‘টাকা থাকলে খুনসহ যে কোনো কিছু করে আপনি পার পেয়ে যাবেন।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে যোগ না দেওয়ার জন্য উত্তর কোরীয়দের কেবল নগদ অর্থ কিংবা সিগারেই ঘুষ দিতে হয় না, তাদেরকে প্রাথমিক বাজারে কাজ করে পাওয়া অর্থের ভাগও দিতে হয়। যারা চীন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কাজ করতে যায় তাদেরকে ঘুষ দিতে হয় সীমান্তরক্ষীদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *