জয়নাল আবেদীন রিটন, বিশেষ প্রতিনিধি:
লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যার পর থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের দুই যুবকের কোন হদিস না পাওয়ায় এই দুই পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
তারা আজও বেচেঁ আছে কি-না মারা গেছেন জানতে চাই স্বজনরা। আর নিহত এবং আহতদের তালিকায় তাদের কারো নাম না থাকায় দিক-বেদিক ছুটছেন পরিবার-পরিজনরা। সরকারের কাছে তাদের পরিবারের দাবী, তারা কেমন আছে বা কি হালে আছে, জানতে চান স্বজনরা। ভৈরব পৌর শহরের জগনাথপুর গ্রামের দালাল জাফরের কথায় সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে অবৈধ পথে লিবিয়ায় পাড়ি জমান একই গ্রামের ইসার উদ্দিন ও বিজয়। জাফরের কথা মতো টাকাও দিয়েছেন তারা। সবশেষ পরিবারের কাছে ২৫ মে একটি ভয়েজ রেকর্ড পাঠায় তারা। রেকর্ডে তারা দু’জনেই ফের ১০ লাখ টাকা করে বলেন, নতুবা তাদেরকে মেরে ফেলা হবে। এর দু’দিন পরেই মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের গুলিতে ২৬জন বাংলাদেশি নিহত হয়। এ ঘটনার পর থেকে ইসার উদ্দিন এবং বিজয়ের কোন খোজঁ মিলছে না। এছাড়াও প্রশাসনের হাতে আসা নিহত ও আহতদের তালিকায় তাদের কারো নাম নেই। ফলে বিপাকে পড়েছেন ইসার উদ্দিন এবং বিজয়ের স্বজনরা। এদিকে বিভিন্ন মাধ্যমে ২৬ জন বাংলাদেশি গুলিতে নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেলেও তালিকায় ২৪ জনের নাম রয়েছে। ফলে বাকী দু’জন কারা জানতে চাই বিজয় এবং ইসার উদ্দিনের স্বজনরা।
এলাকাবাসি জানায় , শহরের জগন্নাথপুর গ্রামের ফল ব্যাবসায়ী আসাদ মিয়ার ছেলে ও একই এলাকার মৃত আলী আকবরের ছেলে মো ঃ ইসার উদ্দিনকে এই এলাকার জাফরের মাধ্যমে আমরা লিবিয়া দিয়ে ইতালী পাঠানোর উদ্দ্যেশ্যে জন প্রতি ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। নির্যাতন করে আবারো দশ লক্ষ টাকা দাবী করে। দাবীকৃত টাকা না দেওয়ায় এখন তারা তাদের ছেলেদের খেঅজ পাচ্ছেনা। মুলত ভৈরবের দালালরা এখান থেকে লোক পাঠিয়ে লিবিয়ার দালালদের কাছে বিক্রি করে দেয়। এদের শাস্তি হওয়া উচিত।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানা সাংবাদিকদের মুঠোফোনে জানান, লিবিয়া হত্যাকান্ডে নিহত এবং আহতদের তালিকায় তাদের কারো নাম নেই। হতাহতের বাইরেও কেউ থাকতে পারে। যেহেতু তাদের কোন হদিস নেই। আমরা তাদের পরিবারের কাছ থেকে দু’জন নিখোঁজের বিষয়টি জেনেছি। এরই মধ্যে আমি লিবিয়ার ত্রিপলীতে দায়িত্বরত বাংলাদেশি কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেছি। তিনি নিখোঁজ হওয়া যুবকদের সঠিক তথ্য খুজেঁ বের করতে চেষ্টা করছেন।