জাতীয়

ভৈরব লুটপাট, ভাংচুর ও মারধর করে আমেনা খাতুনের পৈত্রিক বসতভিটা দখল ও উচ্ছেদের অভিযোগে সৎ ভাইয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন [ভিডিও]

মোঃ শাহনূর,ভৈরব প্রতিনিধি: ভৈরবে লুটপাট, ভাংচুর ও হামলা চালিয়ে পৈত্রিক বসতভিটা দখল করে বাড়ি থেকে দুটি পরিবারকে উচ্ছেদ করে ভুমিদুস্য হাজী সিদ্দিক মিয়া (৬৮) জোরপূর্বক ভবন নিমার্ণ করার অভিযোগ করেছেন ভোক্তভোগি পরিবার।বিকেলে শহরের পৌর মাতৃসদন প্রাঙ্গণে অসহায় আমেনা খাতুন ও আঙ্গুর মিয়া তাঁর সৎ ভাই হাজী সিদ্দিক মিয়ার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে লিখিত বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তভোগি আমেনা খাতুন জানান, ভৈরব পৌর এলাকার কমলপুর দারুল উলুম মাদ্রসা সংলগ্ন ভৈরবপুর উত্তরপাড়া মৌজায় আমেনা খাতুন ও তাঁর ভাই আঙ্গুর মিয়া তাদের দখলে থাকা পৈত্রিক সম্পত্তিতে দীর্ঘ ৩৫বছর ধরে বসবাস করছেন। তাঁর সৎ ভাই হাজী সিদ্দিক মিয়া, ওই সম্পত্তি জবর দখলের পাঁয়তারায় লিপ্ত থেকে তাদের দুটি পরিবারকে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে উক্ত জায়গাটি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আক্রোশের বশ্ববর্তী হয়ে প্রতিপক্ষ সৎ ভাই হাজী সিদ্দিক মিয়া ও মো: সুজন মিয়া বাদী হয়ে, মৃত আব্দুল কাদির মিয়ার তিনপুত্র আ: মন্নাফ, আ: বাকী ও আ: মোতালিব গংদের বিরুদ্ধে বিগত ২০০৮সালের ৮জুন কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞ যুগ্ন জেলা জজ ২য় আদালতে বাটোয়ারা মোকাদ্দমা করেন। যাহার মোকাদ্দমা নং-৪৮/২০০৮খ্রি.। বাদী সিদ্দিক মিয়া হয়রানির উদ্দেশ্যে মিথ্যা অভিযোগ এনে ওই মোকাদ্দমায় সৎ বোন আমেনা খাতুনকে বিবাদী করে।
তিনি আরো বলেন, সিদ্দিক মিয়া বাদী হয়ে গত ১৯ জুন ২০১৮খ্রি. ভৈরব সহকারী জজ আদালতে (বাজিতপুর চৌকি) সৎ ভাই আঙ্গুর মিয়া গংদেরকে বিবাদী করে অপর আরেকটি বাটোয়ারা মোকাদ্দমা করেন। ওই মোকাদ্দমা নং-৬৭ এর তফসিলে বিবাদী আমেনা খাতুনের ঠিকানা কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার ভৈরবপুর উত্তরপাড়া মৌজার পরিবর্তে কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার মজলিশপুর মৌজায় গর্ভস্থ দেখিয়ে অহেতুক হয়রানি করা অভিযোগ আনেন। এছাড়াও অসহায় আঙ্গুর মিয়া ও তার আপন বোন আমেনা খাতুনের ভোগদখলকৃত পৈত্রিক বাড়ি থেকে উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে পরিবারের ১২ সদস্যদের বিরুদ্ধে সিদ্দিক মিয়া মিথ্যা অভিযোগে ভৈরব থানায় গত ৮/৭/২০১৮খ্রি. একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যাহার জিডি নং-৩৬৫।
উক্ত জিডি মুলে অধর্তব্য অপরাধের তদন্তের অনুমতি চেয়ে ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক মো: জাহাঙ্গীর আলম (বিপিঃ ৮১০০০২৯৪৯২) বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল গ্রহণকারী আদালত নং-২, কিশোরগঞ্জে আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত উক্ত ঘটনার তদন্তের অনুমতি প্রদান করলে এসআই জাহাঙ্গীর আলম সরেজমিনে তদন্তে গিয়ে অর্থনৈতিক লাভবান হয়ে আতংক সৃষ্টির জন্য বাদির পক্ষ নিয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাত ১টার পর আঙ্গুর মিয়ার পক্ষের সুমন মিয়া (৩৫), ফাতেমা বেগম (৩০), রাজন মিয়া (২৬), মজিবুর (৫০), অলি মিয়া (২৮),জলিল মিয়াকে (৩৫) গ্রেফতার করে থানা নিয়ে যাওয়ার পরপরই প্রতিপক্ষ সিদ্দিক মিয়ার নেতৃত্বে তার পুত্র মামুন, বিল্লাল মিয়া এবং চাচাত ভাই আতর মিয়ার দুই পুত্র দ্বীন ইসলাম, হুমায়ুন মিয়া সহ অজ্ঞাতনামা প্রায় ৩০/৩৫ জন বহিরাগত লোক মুখোশ পড়ে বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পরিবারের লোকজনকে মারধর করে ৭টি বসতঘর, ১টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং বাড়ি থেকে দুটি পরিবারকে উচ্ছেদ করে। হামলায় রাজনের স্ত্রী সোনিয়া (২৫) শিশু কন্যা রাইসা (২), আঙ্গুর মিয়ার কন্যা লাকী (৩০) আহত হন।
ওই ঘটনার ২দিন পরে প্রতিপক্ষ সিদ্দিক মিয়া উক্ত উচ্ছেদকৃত ভুমিতে জোরপূর্বক ভবন নির্মাণ করেছে বলে জানান ভোক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা।
উক্ত ঘটনায় ভোক্তভোগি আমেনা বেগম বাদী হয়ে ভৈরব থানায় মামলা দায়ের করতে গিয়েও পুলিশ মামলা গ্রহণ না করার অভিযোগ করা হয়েছে। প্রতিপক্ষের হুমকির ভয়ে আতংকিত ভোক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা নিজ বাড়িতে ফিরতে না পারায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দোর্ষীদের শাস্তি দাবি সহ স্থানীয় প্রশাসন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *