রাজনীতি

দেশের সর্বত্র ক্যাসিনোর জোয়ার বইছে: বিএনপি

ডেস্ক নিউজ: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তারা (সরকার) বড়াই করে বলে বাংলাদেশ নাকি উন্নয়নের রোল মডেল। এখন ঘরে ঘরে ক্যাসিনোর জোয়ার বইছে। সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। বিদেশি কেউ বিনিয়োগ করছে না। তারা মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা লুট করছে।’

মঙ্গলবার বিকেলে সিলেটের রেজিস্ট্রি মাঠে এক জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। সিলেট জেলা বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চান? তাহলে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হোন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গতকাল রাত থেকে তিনবার মঞ্চ ভাঙা হয়েছে। তারপরও সিলেটের মানুষের সাহসিকতার ফলে এই জনসভা হয়েছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আজকে এই সভা করছি। গতরাতে ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে সিলেটে ছাত্রদল একটি মিছিল করেছিল, সেই মিছিলে হাজার হাজার লোক শামিল হয়েছিল। সভা বন্ধ করার প্রবণতা এটা ভয়ে কি হয় মনে করেন? কারা সভা বন্ধ করতে চায়? যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। যারা মনে করে জনগণ যদি একত্রিত হয় তাহলে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণই হচ্ছে তাদের পতিপক্ষ। সংবিধানে লেখা রাষ্ট্রে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। কিন্তু বন্দুকের জোরে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। সেজন্য আমরা এই সরকারকে অবৈধ সরকার বলি। তারা এক এক করে সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে।’

গত দুই বছরে ১১ লাখ রোহিঙ্গার একজনকেও ফেরত পাঠাতে না পারায় সরকারের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের কূটনৈতিক তৎপরতা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।

সমাবেশ সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবুল কাহের শামীম। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী যৌথভাবে সমাবেশ পরিচালনা করেন। সমাবেশের শুরুতে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দলের জেলা সভাপতি মাওলানা ফয়েজ আহমদ।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ হক, তাহসীনা রুশদীর লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, বিএনপি নেতা দিলদার হোসেন সেলিম, কলিম উদ্দিন মিলন, জিকে গউছ, আব্দুর রাজ্জাক, নাসিম হোসাইন, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, নাসির উদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, হুমায়ুন কবীর, মোরতাজুল করিম বাদরু, হাসান জাফির তুহিন, মামুন হাসান, আবুল কালাম আজাদ, মীর হেলাল উদ্দিন, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খান প্রমুখ।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই সরকার বিএনপিকে ভয় পায়, খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। আসুন গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য এক সঙ্গে আন্দোলন করি।

মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদা জিয়া নিশ্চয়ই বের হয়ে আসবেন। তার মুক্তির একমাত্র পথ হলো রাজপথ। এই রাজপথে যাওয়ার জন্য আপনাদের প্রস্তুত হতে হবে। রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই তাকে মুক্ত করে আনতে হবে। গণতন্ত্র মানে হলো খালেদা জিয়া।

সরকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি শাখা প্রশাখায় দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। এ সময় তিনি তিন উপাচার্যের দুর্নীতির তীব্র সমালোচনা করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। সেই মুক্তি শেখ হাসিনা দিতে পারবেন না। তার আগে তাকে বিদায় নিতে হবে। তার পতন হবে। আজকে যেখানে যাই সেখানেই একটি কথাই শুনি, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। শেখ হাসিনার বিদায় চাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *