বিশেষ প্রতিবেদন

কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ব্লাড ব্যাংক সম্পূর্ণ ভস্মীভূত

আশরাফ আলী বাবু,চীফ রিপোর্ট : কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ব্লাড ব্যাংক সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেছে। এর ফলে মূল্যবান অনেক যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজ রোববার ভোর ৫টার দিকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় প্যাথলজি বিভাগে অবস্থিত ব্লাড ব্যাংকের একটি রেফ্রিজারেটরে প্রথম আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।  রাতে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে দায়িত্বরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মো. খায়রুল কবির বলেন, ‘আমি পৌনে ৫টার দিকে ফজরের নামাজ আদায়ের জন্য হাসপাতাল মসজিদে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আগুন লাগার খবর পাই এবং সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসে ফোন করি।’ খবর পেয়ে সোয়া ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এর আগেই ব্লাড ব্যাংকে রক্ষিত তিনটি রেফ্রিজারেটর, একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, একটি সেন্ট্রিফিউজ, একটি মাইক্রোস্কোপ, দুটি বৈদ্যুতিক পাখা, দুটি বেড, প্যাথলজি পরীক্ষায় ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ রি-এজেন্ট ও যন্ত্রপাতি, রেফ্রিজারেটরে রক্ষিত রক্ত, চেয়ার-টেবিলসহ অফিসে ব্যবহৃত আসবাব ও কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আজিজুল হক বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা সোয়া ৫টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছি এবং দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। সম্ভবত বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।’ এদিকে, আগুন লাগার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এ সময় স্বজনরা রোগীদের বিভিন্ন তলা থেকে নামিয়ে আনেন। বেগম (২৬) নামের এক রোগীকে নামানোর সময় মারা যায় বলে তাঁর স্বজনরা জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে হাসপাতালে বেগমের এক পুত্রসন্তান জন্ম নেয়। বেগমের স্বামী মো. খুর্শিদ মিয়া জানান, আগুন লাগার খবরে ভয় পেয়ে নবজাতকসহ স্ত্রীকে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে তাড়াহুড়া করে নামার পর পরই বেগম মারা যান। খুর্শিদ মিয়ার বাড়ি জেলার কটিয়াদী উপজেলার ধুলদিয়া ইউনিয়নের রায়খলা গ্রামে। অগ্নিকাণ্ডজনিত পরিস্থিতি পরিদর্শন করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও উপপরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া জানান, আগুনে ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং ব্লাড ব্যাংকের কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *