জয়নাল আবেদীন রিটন:
শরত হেমন্তে গ্রামবাংলার মাঠেঘাটে, নদীর তীরে দেখা যায় দুল খাচ্ছে অতুলণীয় শোভাদানকারি কাশবন ফুল। বছর ঘুরে ভাদ্র আশ্বিন মাস এলেই গ্রামবাংলার প্রকৃতি অপরূপ রূপে সেজে ওঠে। চোঁখ জুড়ানো অতুলনীয় সে দৃশ্য এখন আর খূব একটা চোঁখে পড়েনা। গ্রামবাংলা থেকে বিলুপ্তির পথে এ ঋতুতে বাতাসে দুল খাওয়া চোঁখ ধাধানো মনোমুগ্ধকর সেই কাঁশফুল। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এবং প্রয়োজনের তাগিদে নদীনালা, খালবিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় কিশোরগঞে।জর ভৈরবেও এখন আর খুব বেশি একটা চোঁখে পড়েনা বাতাসের তালে তালে দুল খাওয়া সেই কাশফুল। কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে আজ গ্রামবাংলার শোভাদানকারী কাশফুল। নদীর ধার, খাল-বিল-জলাশয় ঘিরে ঘন কাশবন এখন আর বাতাসে দোল খায় না। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নদী খাল বিলের কিনারায় এক সময় প্রচুর কাশবন দেখা যেত। এ কাশফুল যেমন সৌন্দর্য বর্ধন করত তেমনই কাশফুল গাছ শুকিয়ে জ্বালানী,ঘরের বেড়া,ছাউনিসহ চারাকালিন সময়ে গোখাদ্য হিসেবেও কাজে লাগাতো গ্রামবাংলার কৃষকরা। এখন গ্রামবাংলায় বিচ্ছিন্নভাবে থাকা যে কয়টি কাশফুল চোখে পড়ে সেগুলোও হারিয়ে যাচ্ছে যুগের তালে ৷
জেড রহমান প্রিমিসয়ার ব্যাংক স্কুল এন্ড কলেজের বাইস প্রিন্সিপাল মোঃ ফরিদুল হাসান টুটুল বলেন, কাশফুলের শুভ্রতা খুবই চমৎকার। তবে আমাদের দেশে এ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যগুলা এখন বিলুপ্তির পথে। প্রাকৃতিক এ সৌন্দর্যকে যেন আমরা সংরক্ষনে রাখতে পারি এ জন্য সকলেরই উদ্যাগ নেয়া দরকার।
শিক্ষিকা মৌশুমী বলেন, শরতের শুভ্র আকাশ নিচে কাশফুল মিলিয়ে চমৎকার মনোমুগদ্ধকর একটা পরিবেশ। আর এ পরিবেশটা দেখার জন্য দুর দুরান্ত থেকে লোকজন এখানে ছুটে আসে।
মাহবুবা রহমান রুবি বলেন , দালান কোঠার ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখন আর তেমনটা খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা। আর গরমের প্রভাবে এখন দেখা যাচ্ছে ঋতুর সংখ্যা এসে দাড়িয়েছে তিনটা। আমরা শরতটাকে শুধুই পাই যখন কাশফুল ফোটে।
প্রভাশক নাহিদুল করিম বলেন, প্রকৃতির দিকে তাকালে মনে হয় আকাশ থেকে মেঘের ভেলা নেমে এসেছে এ ভ’ খন্ডে। যারা প্রকৃতিকে অনূভব করতে পারছেননা, প্রকৃতি থেকে দুরে আছেন এখানে এলে জীবনের ক্লান্তি শ্রান্তি ভুলে প্রকৃতির সাথে মিশে যেতে পারব। যেটা আমাদের জীবনকে সজীব আর প্রানবন্ত করে তুলবে।
জেড রহমান স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাশক মো ঃ মোতাহার হোসেন বলেন, মানুষের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে বাংলাদেশ থেকে এখন প্রাকৃতিক অনেক কিছুই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের উচিৎ হবে প্রকৃতির যে দান এদের টিকিয়ে রাখতে ।
হারুন মাহমুদ সুফল বলেন, আমরা নাগরীক জীবনে শত ব্যবস্ততার মাঝে আমরা ছুটে চলে আসি এখানে মুখÍ বাতাসে একটু অক্সিজেন গ্রহন করার জন্য। নদী ভরাটের মধ্য দিয়ে আমরা যেন এ প্রকৃতিটাকে নষ্ট না করি।
উপজেলার প্রবীন কৃষক সরাফত উল্লাহ মিয়া বলেন, প্রায় দশ বছর আগেও জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ নদী ও খাল বিলের পাড়ে কাশবন দেখা যেত, এখন আর তেমন দেখা যায়না। কাশঁফুলের গাছ দিয়ে আমরা ঘরের বেড়া তৈরি করে থাকি, গৃহিনীরা এগুলোকে লাকড়ি হিসেবেও ব্যবহার করে থাকে। মানুষের অর্থের চাহিদার কারণে প্রকৃতির অপরূপ শোভাদানকারী কাঁশবন এখন বিলুপ্তির পথে।