ষ্টাফ রিপোর্টার প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউ ৩৫ বছর বয়সে সরকারি চাকরিতে আসলে ২২ অথবা ২৩ বছর চাকরি করতে পারবে। সে কিন্তু পূর্ণ পেনশন পাবে না।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা অন্তত ৩২ করার সুপারিশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সংসদ নেতা বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবি করা হচ্ছে। ৩৫ বছরে যদি কেউ পিএসসিতে পরীক্ষা দেয়, ওই পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্ট হয়ে চাকরিতে নিতে ৩৮ বছর হবে। ৩৮ বছর বয়সে একজন চাকরিতে নিবে আবার কেউ কেউ ২২ বছর বয়সে একই চাকরি নিবে। কত বছর ডিফারেন্সে দুইজন একসঙ্গে চাকরিতে ঢুকবে? এটা কি তারা চিন্তা করছে?
তিনি বলেন, কেউ কেউ হয়তো ২৪-২৫ বছরেই চাকরি নিচ্ছে। ইতিমধ্যে অবসরে যাওয়ার বয়স ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করেছি। যে ৩৮ বছরে চাকরিতে আসবে সে ২২ অথবা ২৩ বছর চাকরি করতে পারবে। সে কিন্তু পূর্ণ পেনশন পাবে না।
তিনি আরো বলেন, মেধা বা উদ্যম বা তারুণ্য বা সৃজনশীলতাটা সবথেকে বেশি থাকে ২৪ কিংবা ২৫ বছর বয়সে। ২১ বছরেই একজন মানুষ পূর্ণ মানুষ বলা হয়। ২১ বছর থেকেই একজনের পূর্ণতা পায়। ২১ থেকে ২৫ বছরই সবচেয়ে কর্মদক্ষতা থাকে। এই সময়টা কোথায় যাবে, মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সময়টা ওরা কী করবে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে তো ৩০ বছর পর্যন্ত চাকরির বয়স। ৩৮ বছর হলে আরো ৮ বছর চলে যাবে। এটা বৃদ্ধ না হলেও পৌঢ়তে চলে যাচ্ছে। এ সময় চাকরিতে ঢুকে তারা কী কাজ করতে পারবে? তারপর আবার বলা হবে, অবসরের বয়স বাড়ানো হোক। অবসরের বয়সসীমা বড়ানো হলে নতুন চাকরি দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, চাকরির বয়স বাড়ানো নিয়ে যারা আন্দোলন করে তাদেরকে এগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। হ্যাঁ, আমাদের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খুব কম খরচে পড়ানো হয়। সুতরাং ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাওয়া যায় সেটাই ভালো। সেটার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকার গঠন করার পর কোনোবারই পিএসসির পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়নি। নিয়মিত পরীক্ষা হচ্ছে এবং সবাই চাকরিতে ঢুকতে পারছে। সেশনজট কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সেশনজট রয়েছে, তাও কমিয়ে আনতে ব্যবস্থাও নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করেছে। তারা বাপের হোটেলে খেয়ে পড়াশোনা করেনি, তাদের কষ্ট করে পড়াশোনা করতে হয়েছে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা উচ্চ শিক্ষা নিয়েছে, বিদেশে পড়েছে। তারা চাকরি করেছে অথবা ছাত্র লোন নিয়ে পড়াশোনা করেছে। একটা ডিগ্রি নিয়ে চাকরি করেছে, লোন শোধ করেছে, আবার পড়েছে। তারপর তারা কাজ করেছে। আমার এত পয়সা ছিল না। আমার বাবার কিছু বন্ধু-বান্ধব ছিল তারা সহযোগিতা করেছেন। আমার কিছু বন্ধু-বান্ধব সহযোগিতা করেছিলেন বলেই পড়াতে পেরেছি।
তিনি বলেন, বিদেশে যখন পড়েছে, তারা পার্ট টাইম কাজ করেছে এবং এখনো করছে। আমার মেয়ের করতে হয়নি। কারণ, মেয়ের পড়াশোনার মধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে। তারপরেও সে চাকরি করেছে। সবাই নিজেরা খেটে খেয়েছে। রেহানার ছেলে-মেয়েও তাই। কাজেই তাদের সঙ্গে তুলনা করি না। আমাদের ছেলে মেয়ে ২১ বছর বয়সেই চাকরি নিয়েছে।