আন্তর্জার্তিক ডেস্ক: ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় দেশটির কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালানোর মূলহোতা ও জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-ই-মোহাম্মদের কমান্ডার আব্দুল রশিদ গাজী ওরফে কামরান ওরফে আফগানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযানে জয়েশ-ই-মোহাম্মদের এই কমান্ডার ছাড়াও আরো এক জঙ্গি নিহত হয়েছেন। কামরান পুলওয়ামা হামলার মূলহোতা ছিলেন বলে দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
রোববার রাত থেকে পুলওয়ামার পিংলান গ্রামে জঙ্গিদের সঙ্গে টানা দশ ঘণ্টার লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক মেজরসহ চার জওয়ান। একজন সাধারণ নাগরিকেরও মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সোমবার সকালে দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় নতুন করে সেনাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলি বিনিময় শুরু হয়।
সেখানে সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে কামরানসহ কয়েকজন জঙ্গি আটকা পড়ে। এরপরই দুই জঙ্গি নিহত হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী বলছে, পুলওয়ামাসহ একাধিক জঙ্গি হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন কামরান। তবে নিহত দুই জঙ্গির মরদেহ এখনও উদ্ধার করা হয়নি। ওই এলাকায় জঙ্গিরা লুকিয়ে রয়েছে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ, সিআরপিএফ এবং স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের সদস্যরা অভিযান শুরু করে।
গত বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় সিআরপিএফের গাড়ি বহরে আত্মঘাতী হামলায় কমপক্ষে ৪০ সেনা নিহত হয়। এ ঘটনার পর থেকে ভারতের নানা প্রান্তে কাশ্মীরিদের ওপর হামলা, মারধরের খবর পাওয়া যাচ্ছে। পুলওয়ামা হামলার প্রতিশোধে কঠোর অভিযানের দাবিতে দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে বিক্ষোভ করেছে ভারতীয়রা। এমন দাবির মাঝেই সোমবার নতুন করে জঙ্গি হামলার মুখে পড়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবারের হামলার পর সিআরপিএফ জানিয়েছে, ওই এলাকায় নিরাপত্তা দ্বিগুণ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর গাড়ি বহরেও গতিতেও পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছেন সিআরপিএফের ডিজি রাজীব ভাটনগর।
তিনি বলেন, কনভয়ের সময়েও পরিবর্তন করার কথা হয়েছে। কনভয় থামা ও বাকি গতিবিধিও নিরাপত্তাবাহিনী ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে সংযোগ বজায় রেখেই করা হচ্ছে।
পুলওয়ামা হামলার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই হামলার জবাব দেবে ভারত। কোথায়, কখন, কীভাবে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে সে বিষয়ে সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। এর পরেও একই এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে জওয়ানদের নিহত হওয়ার ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা।