নিজস্ব প্রতিনিধি:
দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘ দুই বছর কারাবন্দি রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।বুধবার (২৫ মার্চ) শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জামিন দেওয়া হয়েছে। বিকেলে জামিন হলেও রাত আড়াইটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে বের করা হয়নি।
তবে খালেদা জিয়ার বাসভবন প্রস্তুত করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার জামিনের খবর পেয়ে বিএনপির সিনিয়র কয়েকজন নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসেছিলেন। বিকেলে এসেছিলেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি কিছুক্ষণ থেকে চলে যান।
গিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠান। তাতে তিনি করোনা পরিস্থিতির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নেতা-কর্মীদের এসে ভীড় না করার আহ্বান জানান।
এরপর আসেন খালেদা জিয়ার এক আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
এসময় তিনি বলেন, তার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা করা হয়। আমাদের পক্ষ থেকেও করোনা পরিস্থিতি এবং দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ম্যাডামের মুক্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। চেয়ারপারসনের জামিন হয়েছে। এজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
খালেদা জিয়ার জামিন হওয়ার খবর শুনে মিডিয়া কর্মীরাও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে ভিড় করেন।
সন্ধ্যার পর পর নেতাকর্মীদেরও ভীড় বাড়তে থাকে। আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ঢাকা উত্তরের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, নিপুন রায়, শামা ওবায়েদ প্রমুখ।
করোনা পরিস্থিতির জন্য একসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বারবার মাইকিং করা হয় নেতাকর্মীদের বাইরে যাওয়ার জন্য। পরে সিনিয়র এই কয়েক নেতা বাদে অন্য সবাইকে গেটের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। তখন সবারই অপেক্ষা খালেদা জিয়া কখন মুক্তি পাবেন।
এ সময় কেউ কেউ বলছিলেন কিছুক্ষণের মধ্যে যদি চেয়ারপারসনকে বের না করা হয় আজকে সারারাত যদি এখানে রাখা হয়, প্রয়োজনে আমরাও থাকবো। কিন্তু রাত দশটার পর দেখা গেছে এসব নেতাদের কেউ-ই আর ছিলেন না।
তবে বিএনপিপন্থী চিকিৎসক নেতাদের মধ্যে কেবল এক দুইজন নেতা রাত ১টা পর্যন্ত, খালেদা জিয়া যে ভবনে আছেন তার নিচে অপেক্ষা করেছেন। ১টার পর তারাও চলে যান।
কখন খালেদা জিয়াকে বের করা হবে এ ব্যাপারে বিএনপি’র পক্ষ থেকে কেউ সুস্পষ্টভাবে কিছু জানাতে পারেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বলেছেন ভোর রাতের দিকে বের করা হতে পারে। পরে আবার তিনি জানিয়েছেন আগামীকাল দুপুর ৩টা নাগাদ থাকে বের করা হতে পারে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনকে বের করার জন্য অফিশিয়াল প্রক্রিয়া চলছে। প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোন কাগজ পৌঁছায়নি। পৌঁছালেই আমরা ব্যবস্থা করব।
তবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহীদুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন আইনগত প্রক্রিয়াগুলো শেষ হলে খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে।তবে আইনি প্রক্রিয়াগুলো মঙ্গলবার শেষ না হলেও বুধবার দুপুরের মধ্যে তা শেষ হতে পারে।
তার মানে তিনি বুধবার দুপুরে খালেদা জিয়ার কারামুক্তির ইঙ্গিত দিয়েছেন।