ক্রীড়া ডেস্ক : প্রথম ক্লাব হিসেবে টানা তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপাজয়ী রিয়াল মাদ্রিদের সামনে আরেকটি ইতিহাস গড়ার সুযোগ ছিল। প্রথম ক্লাব হিসেবে টানা তিনবার উয়েফা সুপার কাপ জয়ের সুযোগ। কিন্তু হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার অন্যতম মূল কারিগর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ছাড়া পারেনি ‘লস ব্ল্যাঙ্কোস’রা। উল্টো তাদের ৪-২ গোলে হারিয়ে প্রথম ক্লাব হিসেবে তিনবার সুপার কাপ খেলে তিনবারই শিরোপা জয়ের নজির গড়েছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।
উয়েফা সুপার কাপে সাতবার অংশ নিয়ে এটিই রিয়ালের প্রথম হার। আর অ্যাটলেটিকো এই প্রথম ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার ফাইনালে নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারাল। তাতে ২০১৪ ও ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে রিয়ালের কাছে হারের ক্ষতে কিছুটা সান্ত্বনার প্রলেপও দিল দিয়েগো সিমিওনের দল।
এ মৌসুমেই রিয়ালের সঙ্গে ৯ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে জুভেন্টাসে পাড়ি জমিয়েছেন রোনালদো। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে ছাড়া সুপার কাপই ছিল রিয়ালের প্রথম কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। জিনেদিন জিদানের বিদায়ের পর রিয়ালের নতুন কোচ জুলেন লোপতেগুইয়েরও প্রথম ম্যাচ। রিয়ালের রোনালদো-জিদান পরবর্তী অধ্যায়ের শুরুটা হলো হার দিয়ে।
এস্তোনিয়ার রাজধানী তাল্লিনে বুধবার রাতে ম্যাচের প্রথম মিনিটেই দিয়েগো কস্তার গোলে পিছিয়ে পড়েছিল রিয়াল। এরপর যদিও করিম বেনজেমা ও সার্জিও রামোসের গোলে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ীরা। কিন্তু কস্তার দ্বিতীয় গোলে সমতায় ফেরে অ্যাটলেটিকো। আর অতিরিক্ত সময়ে সাউল ও কোকের গোল গড়ে দেয় ব্যবধান।
গত মৌসুমের ইউরোপা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ীর ম্যাচ। ৪৩ মৌসুমে প্রথমবারের মতো সুপার কাপে মুখোমুখি একই শহরের দুই দল। যেখানে রিয়ালের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। ম্যাচের মাত্র ৪৯ সেকেন্ডেই গোল করে অ্যাটলেটিকোকে এগিয়ে দেন কস্তা।
মাঝমাঠ থেকে লম্বা করে বল বাড়িয়েছিলেন অধিনায়ক দিয়েগো গডিন। কস্তা প্রথমে হেডে পরাস্ত করেন রামোসকে। এরপর রাফায়েল ভারানেকে পেছনে ফেলে বক্সে ঢুকে জোরালো শটে বল পাঠান জালে। সুপার কাপে এটিই সবচেয়ে দ্রুততম গোল। ২০১৫ সালে বার্সেলোনার বিপক্ষে সেভিয়ার এভার বানেগার তিন মিনিটে করা গোল ছিল আগের রেকর্ড।
১৭ মিনিটে সমতায় ফিরতে পারত রিয়াল। কিন্তু অ্যাসেনসিওর শট ফিরিয়ে দেন অ্যাটলেটিকোর গোলরক্ষক ইয়ান অবলাক। ২৭ মিনিটে সমতা ফেরায় রিয়াল। গ্যারেথ বেলের দারুণ এক ক্রস থেকে হেডে বল জালে জড়ান ফরাসি স্ট্রাইকার বেনজেমা।
৬৩ মিনিটে রামোসের পেনাল্টি গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রিয়াল। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল বক্সের ভেতর অ্যাটলেটিকোর হুয়ানফ্রানের হাতে লাগায় পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। ডান পায়ের শটে অ্যাটলেটিকোর গোলরক্ষককে ফাঁকি দেন রিয়াল অধিনায়ক। রিয়ালের এগিয়ে যাওয়ার স্বস্তি অবশ্য ৭৯ মিনিটে আর থাকেনি। কস্তার দ্বিতীয় গোলে সমতায় ফেরে অ্যাটলেটিকো।
নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলের পর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। যেখানে ছয় মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে রিয়ালের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেয় অ্যাটলেটিকো। ৯৮ মিনিটে দারুণ এক ভলিতে গোল করে অ্যাটলেটিকোকে এগিয়ে দেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সাউল। আর ১০৪ মিনিটে দলের চতুর্থ গোলটা করেন কোকে।
১৯৪৮ সালে মিখায়েল কিপিংয়ের পর প্রথম রিয়াল কোচ হিসেবে অভিষেক ম্যাচে চার গোল হজম করলেন লোপতেগুই। আর রিয়াল ২০১৫ সালের নভেম্বরের পর প্রথমবার কোনো ম্যাচে চার গোল হজম করল।