মো: নজরুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগরে তিনটি গ্রামের প্রায় ২৫০টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ
বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এসময় প্রায় ১৫’শ ফুট পাইপ উত্তোলন করে জব্দ করা হয়।
বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের নয়াকান্দি, দক্ষিণ
দিলালপুর ও শুশুন্ডা গ্রামে বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের
অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ
ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিন।
এতে বাখরাবাদ গ্যাসের পক্ষ থেকে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন।
খবর নিয়ে জানা যায়, অবৈধ গ্যাস সংযোগের তালিকাসহ একটি অভিযোগ
বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন, পেট্টোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও দালাল চক্র
বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন দেবিদ্বার জোনাল অফিস ও জেলা অফিসের
কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজোসে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট
উপজেলার ভূবনঘর, দড়িকান্দি, দুলারামপুর গ্রামে ১১ হাজার ফুট, বোরারচর,
জাহাপুর গ্রামে ৩০ হাজার ফুট, দড়িকান্দি গ্রামের ১ কিলোমিটার, করকটিয়া,
সোনাপুর গ্রামের ২ কিলোমিটার, সুবিলারচর গ্রামের ২ কিলোমিটার,
কোম্পানীগঞ্জ এলাকার ৩ কিলোমিটার, রানীমুহুরী, বড়ইয়াকুড়ি, বোরারচর
গ্রামের ৬ কিলোমিটার, নোয়াকান্দি গ্রামে ৯০০ ফুট, ধামঘর গ্রামে ৩৫০
ফুট, পালাসুতা গ্রামে ৬ হাজার ফুট, পায়ব গ্রামের ২ কিলোমিটার, শুশুন্ডা
গ্রামের ৩ কিলোমিটার, কুলুবাড়ি, বাখরনগর গ্রামের ৫ কিলোমিটার, মধ্যনগর,
করিমপুর গ্রামের ৩ কিলোমিটার, নবীপুর গ্রামের ৩ কিলোমিটার, নগরপাড়
গ্রামের দেড় কিলোমিটার, গুঞ্জর গ্রামের ৩ কিলোমিটার, পৈয়াপাথর গ্রামের দেড়
কিলোমিটার ও নহল, রাবনগর, ধামঘর গ্রামের ৩ হাজার ৬’শ ফুট গ্যাস লাইনের
মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাসের আবাসিক সংযোগ দিয়ে সাধারন নিরিহ
গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।
যার পরিপেক্ষিতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন ও পেট্টোবাংলা প্রধান
কার্যালয় থেকে পৃথক দু’টি দল সরেজমিনে এসে তদন্ত করে সত্যতা পায়। পরে
সংশ্লিষ্ট দফতরে তদন্ত রির্পোট জমা দেয়া হলে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে
নামে বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন কোম্পানী।
গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন ঠিকাদার হারুন অর রশিদ প্রতি সংযোগ থেকে
নিয়েছেন ১ লক্ষ টাকা করে। সংযোগ পাওয়ার পর থেকে বইয়ের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত
বিল পরিশোধ করে আসছি। অনলাইনে আমাদের নামও আছে তাহলে কেন গ্যাস
সংযোগ বন্ধ হবে? এখন আমাদের ব্যাক্তিগত টাকাদিয়ে কেনা পাইপ পর্যন্ত নিয়ে
যাওয়া হচ্ছে। তাহলে অফিস কিভাবে অনলাইনে আমাদের নাম তুললো, আমাদের কে
বিল বই দিলো?
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ঠিকাদার হারুন অর রশিদের সাথে মোবাইল ফোনে বহুবার চেষ্টা
করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের কুমিল্লা দপ্তরের
ভিজিলেন্স শাখা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগের একটি
তালিকা করা হয়েছে। সেখানে মুরাদনগর উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রামের নাম
রয়েছে। আজ তিনটি গ্রামের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
নিয়মিত এ অভিযান চলবে। অপরদিকে যারা এসব অবৈধ সংযোগের সাথে জড়িত
তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।