জাতীয়

ভৈরবে ভারতের কেদাকনাথ মুরগ পালন করে সাবলম্ভী কবির মিয়া

জয়নাল আবেদীন রিটন, বিশেষ প্রতিনিধি: 
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভারতের কেদাকনাথ ( কালো মুরগ ) পালন করে সাবলম্ভী হয়েছেন কবির মিয়া নামে এক খামারী। ২০১৭ সালে শহরের চন্ডিবের উত্তরপাড়া গ্রামে তিনি কেদাকনাথ মুরগীর এ খামার গড়ে তুলেন। অনেকেই এ মুরগ খেতে অনেক সুস্বাদু। এ ছাড়াও উচ্ছ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, যৌন দুর্বলতা, হৃদ রোগসহ ক্যান্সারের মত জটিল রোগে আক্রান্তদের বেলায়ও এ মুরগীর মাংস ও ডিম অনেক উপকারী।

সরেজমিনে খামার মালিক কবির মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়,
কবির মিয়া লেখাপড়া শেষ করে বিভিন্ন ব্যবসা করে শেষ পর্যন্ত কােন রকম সুবিধা করতে পারেননি। ইউটিউবে ভারতের কেদারনাথ মুরগের গুরাগুন জানতে পেরে সিদ্ধান্ত নেন কেদারনাথ মোরগ পালনের।
কেদারনাথ মুরগ খেতে যেমন সুসাধু তেমনি রয়েছে এর মধ্যে জটিল রোগের মহৌষধিগুন। তাই তিনি এ কেদারনাথ মুরগ পালনের সিদ্ধান্ত নেন। নরসিংদীতে এ মোরগের খোঁজ পেয়ে প্রথমে তিনি সেখান দুই মাস বয়সি ষাটটি বাচ্ছা মুরগ কিনে আনেন। বাইশটি বাচ্ছা মারা গেলে বাকি আটত্রিশটি বাচ্ছা দিয়ে খামার গড়ে তুলেন। ধীরে ধীরৈ মুরগ বড় হতে থাকে। ছয়মাস বয়সে বাচ্ছা মুরগগুলো ডিম দেওয়া শুরু করে। ধীরে ধীরে কেদারনাথ মুরগের প্রচার পেতে থাকে। আশপাশ এলাকার লোকজন এ খামার দেখতে আসে। এক সময় দুরদুরান্ত থেকেও লোকজন এখঅন থেকে মুরগ কিনে নিতে শুরু করে। আজ কবির মিয়ার খামারে বেচা বিক্রি করেও বর্তমানে তার খামারে সাড়ে তিনশত মোরগ রয়েছে। এ মোরগ পালন করে তিনিি এখন পুরোদমে সাবলম্বী ।

এ মুরগ দেখতে একেবারে কুচকুচে কালো। এ মুরগীর পালক, চামড়া, মাংস, হাড় কলিজা সবই কালো। মুরগী দেখতে কালো হলেও এর পুষ্টিগুন অন্য যে কোন জাতের মুরগীর তুলনায় অনেক বেশি। মানবদেহে জটিল রোগের বেলায় এ মুরগীর মাংস ও ডিম মহৌষধ বলে খ্যাত। প্রথম দিকে বেচা বিক্রি কম হলেও এখন মোটামটি বেচা বিক্রি ভাল। একেকটি মুরগী দুই কেজি ওজনের। বিক্রি করছেন বারশত থেকে পনেরশত টাকা দামে। বাচ্চা ফুটানোর উপযোগী ডিম বিক্রি করছেন প্রতি হালি দুইশত টাকা দরে। কেদাকনাথ মুরগী দেশি মুরগীর মত উন্মুক্ত স্থানে রেখেও পালন করা যায়। কেদাকনাথ মুরগী অন্যান্য মুরগীর মত স্বাভাবিক খাবার খায়। তাছাড়া মুলাম জাতীয় ঘাসও খেয়ে থাকে। এ মুরগী অন্য যে কোন মুরগীর তুলনায় খেতে অনেক সুস্বাদু ও নিরাপদ। এর পুষ্টিগুনও অনেক বেশি। যারা জটিল রোগে আক্রান্ত তারা পথ্য হিসেবেও এ মুরগীর ডিম ও মাংস খেয়ে থাকেন। কবির মিয়ার কেদারনাথ মোরগ পালনে সাবলম্ভী হতে দেখে এখন এলাকার অনেকেই কেদারনাথ মােরগ পালনে উদ্যোগী হয়ে উঠছেন।

স্থানিয়রা বলেন, অন্যান্য জাতের মোরগের তুলনায় এ মোরগের পুষ্টিগুন অনেক বেশি। তাছাড়া অনেক জটিল রোগের মহৌষদও। এ মোরগ পালনে কোন লোকসান নেই। একটু শ্রম দিলে এ পেশায় অনেকেই লাভবান হতে পারবে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম খান বলেন , কেদারনাথ মোরগ পালন করে ভৈরবে কবির মিয়া নামে এক খামারী অনেক সুনাম অর্জন করেছেন। এ মোরগে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুন। মানব দেহের অনেক জটিল রোগের পথ্য হিসেবেও কাজ করে এ মোরগের মাংস ও ডিম। কেদারনাথ মোরগ স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি ও নিরাপদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *