জেলা প্রতিনিধি: বাগেরহাটের পানগুছি ও বলেশ্বর নদীতে ভরা মৌসুমেও দেখা মিলছে না রুপালি ইলিশের। আষাঢ় পেরিয়ে চলছে শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহ, নদীতে বেড়েছে পানি, থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টি তবুও দেখা নেই ইলিশের। ফলে জেলেরা নদীর পাড়ে জাল নৌকা ফেলে অলস সময় কাটাচ্ছে। নদীতে মাছ না পাওয়ায় প্রায় ৮ হাজার জেলে পরিবার নিয়ে কাটাচ্ছে মানবেতর জীবনযাপন। আগে এই মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পরলেও এখন পানগুছি ও বলেশ্বর নদী থেকে জেলেরা ফিরছেন খালি হাতে। প্রতিদিনই একইভাবে শূন্য হাতে ফেরায় নদীতে যেতে জেলেদের দেখা দিয়েছে অনীহা। বছরের এ ভরা মৌসুমে জেলেরা মহোৎসবে রুপালি ইলিশ ধরেন, ঝুড়ি ভরে মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরেন। আড়তে মাছ রাখতেই শুরু হয় হাক-ঢাক। ঘাট এলাকায় থাকে ক্রয়-বিক্রয়ের সরগরম। কিন্তু বর্তসান চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত।
বুধবার বিকেলে জেলার শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর মাছ ঘাট এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে নদীতে তেমন মাছ ধরার নৌকা নেই। নেই জেলেদের ব্যস্ততাও। ঘাটে নেই বিক্রির ভিড়। অলস সময় পার করছেন জেলে, আড়ৎদার ও মাছ বিক্রেতারা।
কচুয়া উপজেলার জেলে পাড়ার কবির হোসেন (৪৭) বলেন, সুন্দরবনের বঙ্গবসাগরে মাছ শিকার করা তার একমাত্র পেশা। তিনি বছরের পর বছর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন মাছ ধরে । তাঁর সাথে আরো দশ জন জেলে একই ট্রলারে মাছ শিকার করেন। তিনি আরো জানান, এবার সাগরে মাছের দেখা মেলেনি যে মাছ পেয়েছেন তাতে খরজের টাকা ওঠেনি। এতে দৈনিক খরচের তুলনায় আয় না হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা। তাছাড়া বিনিয়োগ করে লোকসান গুণছেন আড়ৎদার ও দাদন ব্যবসায়ীসহ এর সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা।
বাগেরহাট মৎস্য আড়ৎদাররা জানান, সাগরে তাদের লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। এমনিতেই সরকার মার্চ-এপ্রিল দু’মাস মাছ ধরা বন্ধ রাখে। এরপরেও নদী ও সাগরে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। সাগর ও নদীতে মাছ ধরা না পড়ায় ব্যবসায় লোকসান গুণতে হচ্ছে এবং ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করা কষ্টকর হয়ে যাবে।
জেলার মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া হায়দার চৌধুরী জানান, আশা করছি আগস্টের মাঝামাঝি থেকে নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ মাছ ধরা পড়বে।