আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটিতে এ বিষয়ে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এক্ষেত্রে ২০ দলীয় জোট ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর মনোভাবের ওপর এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে। স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনকে।
তবে নির্ভরযোগ্য আরেকটি সূত্র বলছে, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হলেও কঠোর কোনও আন্দোলনে যাবে না বিএনপি। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে দেশবাসীকে নির্বাচন প্রতিহত করার আহ্বান জানানোর চিন্তা রয়েছে তাদের।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনের কাছে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সময় নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হবে। আর নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হলে আমাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা প্রকাশ্যে বলার সময় আসেনি। এটা আপনি কীভাবে আশা করছেন?’
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব দেবে। এ প্রক্রিয়া সেপ্টেম্বর নাগাদ প্রকাশ্যে আনার প্রস্তুতি রয়েছে দলটির। এক্ষেত্রে সরকার পুরোপুরি প্রস্তাব এড়িয়ে গেলে কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা রাখছে বিএনপি। যদিও দলটির কোনও কোনও নেতার উষ্মা, কেন এখনও সহায়ক সরকারের প্রস্তাব পেশ করা হচ্ছে না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, সম্ভবত আগামী অক্টোবরে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হবে।
বিএনপির একজন ভাইস-চেয়ারম্যান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দেবে-দেবে করেও দিলো না। এখন আর সময় কই। এখন শেখ হাসিনা যা করবে, তাই মানতে হবে।’
স্থায়ী কমিটির দুজন সদস্য জানান, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন প্রক্রিয়া ও ব্যক্তি নির্বাচন পছন্দমতো না হলে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে। এক্ষেত্রে অন্য দলগুলো সম্মত হলে ২০ দলীয় জোটকে নিয়ে কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি, তা-ও শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় জমায়েত বা সমাবেশের মাধ্যমে।
আরেক সদস্য মনে করছেন, ‘আন্দোলনের ইচ্ছা বা পরিবেশ নেই’ ধরে নিয়েই এগুচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড। এক্ষেত্রে জনগণকে বিরক্ত করে এমন কর্মসূচি না দিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পথ খুঁজে নেবে দলটি। আর এই প্রতিবাদের ইস্যুগুলো ব্যবহার করতে অন্যান্য দলগুলোকে উৎসাহিত করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বড় কোনও কর্মসূচিতে এখনই যাওয়ার পরিকল্পনা নেই বিএনপির। এটা হতে পারে, নির্বাচন এককভাবে করার চেষ্টা করবে সরকার।’ এক্ষেত্রে ভোটাধিকার বঞ্চিত মানুষেরাই প্রতিবাদ জানাবে বলে মনে করেন বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এই নেতা।