জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০ দলীয় জোট।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকের পর জোটের সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম খান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় যে, তিন সিটিতে একক প্রার্থীর পক্ষে ২০ দল সম্মিলিতভাবে সক্রিয়ভাবে কাজ করবে। প্রত্যেক সিটি করপোরেশনে ২০ দলের একজন করেই প্রার্থী থাকবে এবং সেই একক প্রার্থীর পক্ষে সবাই একযোগে কাজ করবে।’
জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগর আমীর এহসান জুবায়েরের প্রার্থিতার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় এখনো শেষ হয়নি। আমরা বলেছি যে, প্রার্থী একজনই থাকবেন।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আজকের বৈঠকে জামায়াত ইসলামীর প্রতিনিধি ছিলেন। তারা একমত হয়েছেন যে, তারা একক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে।’
সিলেটে জামায়াতে ইসলামী ছাড় দেবে না বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সেটা তাদের বক্তব্য। আমাদের ২০ দলের বক্তব্য হচ্ছে আমরা একক প্রার্থী নিয়েই নির্বাচন করব।’
সেক্ষেত্রে যদি বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে জামায়াতের প্রার্থীর নির্বাচন হয় তাহলে আপনারা কী করবেন? প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে তখন, আপনারা জানতে পারবেন। তবে আমরা সিলেটে যে প্রার্থী দিয়েছি (আরিফুল হক চৌধুরী) সেটাকে ২০ দল ইতিমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে।’
সিলেটের প্রার্থী নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের কোনো টানাপোড়েন হবে কি না, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোনো টানাপোড়েন হয়নি। এখন পর্যন্ত প্রশ্নই উঠেনি। যে কারণে আপনারা নিশ্চয় আমাদের রেজ্যুলেশন লক্ষ করেছেন যে, আমরা ২০ দল একত্রিতভাবেই কাজ করব।’
তিন সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ ২৬ জুলাই। ধানের শীষ প্রতীকে মেয়র পদে বরিশালে প্রার্থী হয়েছেন মজিবুর রহমান সারোয়ার, সিলেটে আরিফুল হক চৌধুরী ও রাজশাহীতে মো. মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
বৈঠকে কারাবন্দি জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার জামিন বিলম্বে সরকারের ছলচাতুরির নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি জানানো হয়।
এছাড়া জোটের কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তি, গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনার নিন্দা জানানো হয়েছে।
জতিসংঘের মহাসচিবের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে জোটের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর আরো চাপ সৃষ্টির জন্য জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়।
চাকরিরত সকল ইউএনওর শিক্ষা ও রাজনৈতিক জীবন এবং তাদের নিকট আত্মীয়দের বিষয়ে সরকার যে গোপন অনুসন্ধানে চালাচ্ছে তার নিন্দাও জানিয়েছে ২০ দল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মুর্তজা, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এমদাদুল হক চৌধুরী, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা রেজাউল করীম, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ২০ দলীয় জোটের সভা হয়।