রাজধানী প্রতিবেদক গাঁধার জল ঘোলা করে পানি খাওয়ার মতো বিএনপির সাংসদরা শপথ গ্রহণ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সাংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য বিএনপির নির্বাচিতদের অভিনন্দন জানান তিনি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে ‘তারুণ্য কথা’ নামক সংগঠনের বঙ্গবন্ধুর একশত দূর্লভ আঁকা ছবির প্রদর্শনীতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দু:খজনক হলেও সত্য যে গাধা জল ঘোলা করে খায়, বিএনপি এমপিদের সেরকমের অবস্থা হয়েছে। তারা যে শপথ নিলেন তারা কিন্তু গাধা যেমন জল ঘোলা করে খায় সেরকম। তবে তারা শপথ নিয়েছে এর জন্য অভিনন্দন জানাই।’
বিএনপি শপথ গ্রহণ নিয়েও মিথ্যাচার করেছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল সকাল বেলা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন সরকারের পক্ষ থেকে শপথের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। আর কালকে শপথ নেওয়ার পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে বললেন তাদের উপরে কোন চাপ নেই, তারেক রহমানের নির্দেশে তারা শপথ নিয়েছেন।’
‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেটা বলেছেন সেটাই সত্যি, তারা যে সময়ে সময়ে মিথ্যা কথা বলেন এরই প্রমাণ হলো সকালে রিজভী আহমেদের বক্তব্য এবং রাতে মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেবের বক্তব্য।
দেয়ালজুরে বঙ্গবন্ধুর একশ চিত্রকর্ম :
বঙ্গবন্ধুর বর্ণিল জীবনের নানা সময়কে উপজীব্য করে আঁকা এমনই একশ চিত্রকর্ম নিয়ে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ‘আছো সত্তায় আছো চেতনায়’ শীর্ষক প্রদর্শনী।
জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী চিত্রালয়ে ৫ মে পর্যন্ত চলমান এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে তারুণ্য কথা।
যেখানে বঙ্গবন্ধুর কোলের মধ্যে নাতি সজিব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে হাস্যোজ্জ্বল মুহূর্তে তিনি। যার পেছনে দাঁড়িয়ে গভীর মমতায় চেয়ে আছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ছবিটি এঁকেছেন শিল্পী রাজীব শীল।
আরেকটি ছবিতে দেখা গেলো-মানচিত্রের মাঝে বঙ্গবন্ধুর অবয়ব। যার চারপাশ জুড়ে লেখা-‘ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’। এ ছবিটি এঁকেছেন শিল্পী শাহানা মোস্তফা।
যৌথভাবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরী ও অধ্যাপক জামাল আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সভাপতিত্ব করেন তারুণ্য কথার আহ্বায়ক আতিকুর রহমান দিপু।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ছবি আঁকতে গেলে হৃদয়ের গভীরতা লাগে। এটা কোন সহজ কাজ না। লেখনীর চেয়ে চিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলে ধরা কঠিন। প্রতিটি চিত্রকর্মই অসাধারণ। এ প্রদর্শনী ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া উচিৎ। তাহলে ঢাকার বাইরের তরুণরাও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চমৎকার এ আয়োজনটি দেখতে পারবেন। এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলার আয়োজন করা গেলে, পুরো আয়োজনটিই হবে অসাধারণ।’
‘বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে জাতি উন্নত হয় না। এতে উন্নত দেশ গঠন করা যায়, উন্নত জাতি গঠন করা যায় না। এর পাশাপাশি উন্নত জাতি গঠন করাটা এখন জরুরি। মানুষের মানবিকতার উন্মেষ ঘটনাতে চিত্রশিল্পীদের কাজ করতে হবে।’
প্রদর্শনীতে ৮১ জন শিল্পীর একশত চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। প্রথিতযশা শিল্পীদের মধ্যে রয়েছে সমরজিৎ রায় চৌধুরী, শেখ আফজাল, শহীদ কাজী, কিরীটি রঞ্জন বিশ্বাস, গুপু ত্রিবেদী, অমিত নন্দী প্রমুখ। এর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ও চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
এসব ছবির অনেকগুলোতেই শিল্পীরা ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে তুলে ধরেছেন। এর পাশাপাশি মা সায়েরা খাতুন, মেয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ঘনিষ্ট জীবনও তুলে এনেছেন শিল্পীরা। রয়েছে পাইপ টানা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর চিরায়িত দৃশ্যপটও।
সভাপতি দীপু জানান, ‘আছো সত্তায় আছো চেতনায়’ শীর্ষক এ প্রদর্শনী দেশের বিভিন্ন স্থানে পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত হবে। সে সঙ্গে অনলাইনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
বৃহস্পতিবার থেকে ৫ মে পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।