মো: রফিকুল ইসলাম রুবেল, ভৈরব ( কিশোরগঞ্জ ) প্রতিনিধি :
কিশোরগন্জের কুলিয়ারচরের বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি টানা ৩ দিনের অবরোধে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, সড়কে যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঘটনায় বিএনপির কেদ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শরীফুল আলমকে প্রধান আসামী করে প্রায় ১৫০০ জনের বিরুদ্ধে থানায় আলাদা তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। তিনটি মামলায় প্রধান আসামী করা হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগন্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ শরীফুল আলমকে। এসব মামলার প্রতিটি এজাহারে ৪৩ জনের নাম উল্লেখসহ এক হাজার ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে পৃথকভাবে তিনটি মামলা করা হয় বলে কুলিয়ারচর থানা সূত্রে জানা গেছে। এই ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করে। বিএনপির ডাকা অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার সকালে কুলিয়ারচর বিএনপি ও দলের অংগসংগঠনের নেতাকর্মীরা কর্মসূচী পালনের সময় ছয়সূতি এলাকায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। এসময় পুলিশের গুলিতে কৃষক দলের নেতা বিল্লাল মিয়া ও ছাত্রদল নেতা রেফায়েত উল্লাহ নিহত হয়। এছাড়া কুলিয়ারচর থানার ওসিসহ ১০ পুলিশ আহত হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে।
কুলিয়ারচর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মঙ্গলবার রাতে তিনটি মামলার মধ্য একটি হলো পুলিশ এ্যাসাল্ট মামলা, অপর দুটি হলো একটি সন্ত্রাস বিরোধী আইনে এবং আরেকটি হলো কিশোরগন্জ – ভৈরব সড়কের বাজরা এলাকায় যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে রাস্তায় আগুন দেয়ার অপরাধে। মামলাগুলিতে উল্লেখ করা হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শরীফুল আলমের নির্দেশে কুলিয়ারচর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা, রাস্তায় অবরোধ সৃষ্টি করে জনগনের জানমাল ক্ষতির চেষ্টা করে এবং রাস্তায় আগুন লাগিয়ে যানবাহন চলাচলে বাধার সৃষ্টি করার অপরাধ।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির নেতা এম এ হান্নান বলেন, অবরোধের সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মো: শরীফুল আলম কুলিয়ারচরে উপস্থিত ছিলেন না। নেতাকর্মীরা যেহেতু দল করে তাই তারা স্বইচ্ছায় কেন্দ্রীয় নেতাদের ডাকে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছিল। বিএনপির এক দফা শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে আগামী নির্বাচন করতে হবে। তিনি বলেন ইতিপূুর্বে কুলিয়ারচরে যত ঘটনা হয়েছে তার সকল মামলায় পুলিশ আমাদের নেতা আলম সাহেব কে প্রধান আসামী করেছে। পুলিশ অযথা গুলি করে দুইজন বিএনপির কর্মীকে হত্যা করল সেই মামলা করা হয়নি। শরীফুল আলম কে মামলাগুলিতে মিথ্যা আসামী করা হয়েছে একমাত্র হয়রানী করতেই। তিনি মামলার বিষয়টি তীব্র প্রতিবাদ জানান।
কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) গোলাম মোস্তফা তিনটি মামলার কথা স্বীকার করে বলেন, মঙ্গলবার বিএনপির নেতা কর্মীরা অবরোধের নামে ছয়সূতি এলাকায় যে তান্ডব ঘটিয়েছে নজীরবিহীন ঘটনা। তারা পুলিশের গাড়ীতে হামলা করে ১০ পুলিশকে আহত করে। আমি নিজেও আহত হয়েছি। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। শরীফুল আলম ঘটনাস্থলে ছিলনা তাকে তিন মামলায় প্রধান আসামী কেন করা হলো, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ডিজিটাল যুগে ঘটনাস্থলে আসতে হয়না। মোবাইলে বা বিকল্প ব্যবস্থায় ঘটনার নির্দেশদাতা তিনি, তাই হুকুমের আসামী করা হয়েছে তাকে।