ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো কয়েক লাখ মানুষকে করোনার টিকা দিয়েছে। জরুরি ব্যবহারের কারণ দেখিয়ে এভাবে বিপুল সংখ্যক মানুষকে ট্রায়ালপূর্ব টিকা দেওয়ায় এর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শুক্রবার এক চীনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীন করোনার সংক্রমণকে বহুল পরিমাণে নির্মূল করেছে। কোভিড-১৯ ফিরে আসা প্রতিরোধে এখন পদক্ষেপ প্রয়োজন।
তবে চীনের বাইরের এক বিশেষজ্ঞ জরুরি ব্যবহারের নামে করোনার টিকার ব্যাপক প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার ভাষ্য, যেখানে চীনে আর করোনার সংক্রমণ ঘটছে না সেখানে এখন এই টিকার জরুরি প্রয়োগের প্রয়োজনটা কোথায়।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এ পর্যন্ত কতজনকে ট্রায়ালে থাকা করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে চীনা টিকা উৎপাদনকারীরা কিছু সূত্র দিয়েছে। এতে দেখা গেছে, রাষ্ট্রীয় পরিচালনাধীন সিনোফার্মার সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিএনবিজি ক্লিনিক্যিাল ট্রায়ালের বাইরে সাড়ে তিন লাখ মানুষকে এই টিকা দিয়েছে। আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাক বায়োটেক তার ৯০ শতাংশ কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের টিকা দিয়েছে। এই সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। অধিকাংশকেই জরুরি ব্যবহারের আওতায় টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ইন উইডং। এর বাইরে প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়ন করা টিকা করোনাভ্যাকের কয়েক হাজার ডোজ বেইজিং নগর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে।
সেনা নিয়ন্ত্রিত বায়োফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি ক্যানসিনো বায়োলজিকস ইনকরপোরেশনকে পৃথকভাবে করোনার টিকা উন্নয়নের অনুমতি দিয়েছে সরকার।
তৃতীয় বা শেষ ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে থাকা ওষুধ ব্যবহার ঐতিহাসিকভাবে অনুমোদিত। তবে ট্রায়ালের বাইরে টিকা বা ওষুধ প্রয়োগ করা হলে এর পাশ্বপ্রতিক্রিয়া যাচাই করার সুযোগ নেই। চীন সরকার অবশ্য দাবি করেছে, নিজস্ব কঠোর প্রক্রিয়ার মধ্যে তারা টিকার জরুরি ব্যবহার করছে।
দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের কর্মকর্তা ঝেং ঝোংউই শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা এটা স্পষ্ট করেছি যে জরুরি ব্যবহারের জন্য আমাদের দেওয়া কোভিড-১৯ এর টিকা নিরাপদ। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে কার্যকারিতা এখনও নির্ণয় করা যায়নি।’
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, টিকা নিয়ে চীনের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। গত দুই দশকে দেশটিতে এ নিয়ে কয়েকটি কেলেঙ্কারি রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে শিশুদের জন্য র্যাবিজ টিকা নিয়ে মিথ্যা রেকর্ড ও অকার্যকর টিকার জন্য তদন্তের মুখে পড়েছিল চ্যাংশেং বায়োটেকনোলোজি। ২০১৭ সালে উহান ইনিস্টিটিউট অব বায়োলোজিক্যাল প্রোডাক্টসের বিরুদ্ধে ডিপথেরিয়ার ত্রুটিপূর্ণ টিকা তৈরির অভিযোগ ওঠে।