ফেনীর ছাগলনাইয়া পৌরসভায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জমিদারবাড়িটি শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভেঙে ফেলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জমিদার বিনোদ বিহারী পোদ্দারের বংশধর জমিদার অমর কৃষ্ণ চৌধুরীর ৮ একর জমির ওপর নির্মিত হয় জমিদার বাড়িটি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদারদের হামলার শিকার জমিদার পরিবারটি সকল ভূ-সম্পদ রেখে ভারতে চলে যায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও তারা আর ফেরেনি।
বাড়িটি ছাগলনাইয়া পৌর এলাকার বাঁশপাড়ায় অবস্থিত। পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় জায়গাটির বেশ চড়া মূল্য। অন্তত কয়েক কোটি টাকা। শতবছরের পুরোনো জমিদার বাড়িটি দখল করতে তাই ভূমি দস্যুদের একটি চক্র মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জমিদার বাড়ির পাশে সাতটি চিতা মন্দির থাকায় জমিদার বাড়িটির নাম এখন সাত মন্দির বাড়ি বা রাজবাড়ি হিসাবে পরিচিত। এগুলো প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদের আওতায় রয়েছে।
১৯৭১ সালের দিকে জমিদার বিনোদ বিহারী কলকাতা চলে যাওয়ার পর জবর দখল করে নেন স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা। সরকার পরিবর্তন ও ক্ষমতার পালাবদলে কখনও বিএনপি, কখনও আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে জায়গাটি দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে ভূমি দস্যুরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ছাগলনাইয়ার পৌর মেয়র মোস্তফাসহ শাহজাহান ও আলী শুক্রবার সকাল থেকে বুলডোজার দিয়ে জমিদার রাজবাড়িটি ভাঙা শুরু করে।
ছাগলনাইয়া পৌরমেয়র মো. মোস্তফা জানান, ‘এটি তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। তার বাবা মো. ইদ্রিস এ সম্পত্তি কিনে নেন। তবে সেই সম্পত্তি কবে, কখন তার বাবা কিনেছেন তা তার মনে নেই। সম্পত্তির দলিল অনুসারে তারা খাজনা দিচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, ভূয়া দলিল তৈরি করে মৃত ফয়েজ আহম্মদ চেয়ারম্যান জমিদার বাড়ির একটি অংশ দখল করেন। বর্তমানে ফয়েজ চেয়ারম্যানের ভাইয়েরা বিনোদ বিহারী পোদ্দারের সকল ভূ-সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে।
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) গোলাম জাকারিয়া জানান, জায়গাটি ঐতিহ্যবাহী প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ হলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হবে।