নজরুল ইসলাম, মুরাদনগর প্রতিনিধি:
কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার থেকে তাসফীর ইসলাম (৫) নামের শিশু অপহরণ হয়। অপহরণের ৩ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার করেছে কুমিল্লা মুরাদনগর থানা পুলিশ। এই ঘটনায় মুরাদনগর থানা পুলিশ শিশুটির দাদি, চাচাসহ ৪ জন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে । কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা প্রেস ব্রিফ্রিয়ের মাধ্যমে সাংবাদকিদরে সামনে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার) পিপিএম। প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান- মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের শুশুন্ডা গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার নহল গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে ও অপহৃত শিশু তাফসিরের বাবার চাচাতো ভাই কবির হোসেন (৩৩), দাদি জোহরা বেগম (৬০), রায়তলা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৬) ও নাগেরকান্দি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (২২)। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে অপহৃত শিশুটির মা তানিয়া আক্তার (২৭) সাংসারিক খরচের টাকা উত্তোলনের জন্য উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ সোনালী ব্যাংকে যাওয়ার পথে ছেলে তাফসিরকে চাচাতো দেবর কবির হোসেনের মোটর সাইকেলে বসে থাকতে দেখেন। ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বাড়ী ফেরার পথে কবিরের স্ত্রী ফোন করে জানায় শিশু তাফসিরকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার ৫ মিনিট পর অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন করে ৪ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। টাকা না দিলে শিশুটিকে খুন করে ফেলা হবে। পরে তানিয়া বেগম তার ছেলে অপহরণ ও মুক্তিপনের বিষটি নিকট আত্বীয় আশ্রাফ মেম্বারের মাধ্যমে বেলা ৩টায় মুরাদনগর থানা পুলিশকে জানায়। মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলমের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নাহিদ আহম্মেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহৃত শিশু তাসফিরের চাচা কবিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অপহরনের বিষটি স্বীকার করে বলেন- তাসফির দাদি জোহরা বেগমের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় দেলোয়ার হোসেন, রাসেল মিয়া, নাসির, বাহাদুর ও রুবেল এর সহায়তায় শিশু তাফসিরকে মুক্তিপরের জন্য অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে জোহরা বেগমকে গ্রেফতার করে অন্য আসামীদের অবস্থান শনাক্ত করে মুক্তিপনের টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা বললে অপহরণকারী রাসেল উপজেলার নাগেরকান্দি এলাকা থেকে মুক্তিপনের টাকা নিতে আসে। এ সময় পুলিশ কৌশলে রাসেলকে গ্রেফতার করে রাসেলের মাধ্যমে অপহরণকারী দেলোয়ারকে জানায় মুক্তিপনের টাকা পাওয়া গেছে। তখন দেলোয়ার তানিয়া বেগমকে মুঠোফোনে বলে মুক্তিপনের টাকা পাওয়া গেছে তোর ছেলে শুশুন্ডা কবরস্থান মসজিদে আছে নিয়ে যা। পুলিশ অপহৃত শিশু তাফসিরকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে শুশুন্ডা কবরস্থান মসজিদ থেকে উদ্ধার করে অপহরণকারী দেলোয়ারকে রায়তলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। এ বিষযয়ে মঙ্গলবার রাতে তাফসিরের মা তানিয়া বেগম বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ৬ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মুরাদনগর থানা পুলিশ আরো জানান- মামলার অপর আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।