অর্থনীতি বিশেষ প্রতিবেদন

১৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে ৬ ব‌্যাংক

অর্থনীতি ডেস্ক:

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও পরিষেবা খাতকে ১৬ হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ দেবে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংক। প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ৩ বছরের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের এই ঋণ দেওয়া হবে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরে ৪ হাজার ৬০ কোটি, ২০২১ সালে ৫ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা এবং ২০২২ সালে ৬ হাজার ১০ কোটি টাকা দেওয়া হবে।

সম্প্রতি ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বার্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ঋণ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত শিল্প ও পরিষেবা খাতের জন্য বিশেষ মূলধন সহায়তার প্রেরণামূলক প্যাকেজ হিসেবে গণ্য হবে।

সরকারের এই উদ্যোগকে ব‌্যাংকগুলো প্রশংসা করেছে। তবে, এই ঋণ সুবিধা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ব্যাংকগুলোকে ঋণ-বিতরণনীতি সহজ করার জন‌্য প্রচলিত ধারার বাইরে আসতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘৩ বছরের জন্য যে ঋণ প্যাকেজ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তা সময়োপযোগী। তবে, আগে ব্যাংক পরিচালনা, পরিচালনা পর্ষদের পরিবর্তন দরকার।’ তিনি বলেন, ‘প্রচলিত ব্যবস্থায় এই প্যাকেজ কার্যকর করা সম্ভব হবে না। এই ঋণ প্যাকেজের সাফল্য নির্ভর করবে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা, দক্ষতা ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার ওপর। এজন্য আমাদের প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পরিচালনা পর্ষদ অবশ্যই রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হতে হবে। তবেই এই প‌্যাকেজ বাস্তবায়ন সম্ভব।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন,‘এই বিশেষ প্যাকেজের ঋণের ওপর সুদের হার অন্য যেকোনো ঋণের তুলনায় কম হবে।’

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এই কর্মসূচির আওতায় সোনালী ব্যাংক আগামী তিন বছরের জন্য (২০২০-২০২২) ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে। এছাড়া, জনতা ব্যাংক ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংক ৩ হাজার কোটি, রূপালী ব্যাংক ৩ হাজার ৩০০ কোটি, বেসিক ব্যাংক ২৯৪ কোটি এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন ব্যাংক (বিডিবিএল) ৫০ কোটি টাকা ঋণ দেবে।’

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘কিছু নীতিগত সমস্যার কারণে প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছায় না।’ তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রায় নীতিগত পরিবর্তন না আনলে সরকার যে উদ্দেশ্যে এই ঋণ সুবিধা দিচ্ছে, তা সফল হবে না।’ এই ঋণ ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও পরিষেবা খাতে পৌঁছানোর জন্য নীতিমালা আরও সহজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *