দেশজুড়ে

স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ৪ গ্রাম্য মাতব্বরসহ ধর্ষকের বিরুদ্ধে ১৪ দিন পর মামলা

মোঃ নজরুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরে সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবাদ করায় গ্রাম্য মাতব্বরদের মাধ্যমে পরিবারের লোকজনকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গ্রাম্য মাতব্বরদের বিরুদ্ধে ৭০ হাজার টাকা ভাগাভাগি করার অভিযোগও রয়েছে। অবশেষে ঘটনার ১৪ দিন পর ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ৪ মাতব্বর ও ধর্ষকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে।
গত ১২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কেমতলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ধর্ষক কাশেম মিয়া (৫৫) পালাসুতা গ্রামের মৃত মতি মিয়ার ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী দারারো দ্বীনেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। লকডাউনের কারনে স্কুল বন্ধ থাকায় মায়ের সঙ্গে ৩টি ছাগল লালন পালন করতো। প্রতিদিনের মতো ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে বাড়ীর আঙ্গীনায় যায়। ঘটনার দিন দুপুরে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে সে ঘরে আসলে আগে থেকে উৎপেতে থাকা কাশেম মিয়া কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী ডাক চিৎকার শুরু করলে অভিযুক্ত কাশেম মিয়া দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে পাশের বাড়ীর লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই ছাত্রীর মা-বাবা স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে বিচার প্রার্থী হয়। তারা ওই পরিবারটিকে কোন প্রকার সহযোগিতা না করে উল্টো বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বলা হয়। এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে যাওয়ার পথে অভিযুক্ত কাশেম মিয়ার ছেলে আক্তার হোসেন, স্থানীয় মাতব্বর হযরত আলী হর্জন, নুরুল ইসলাম ও মনির হোসেন ভূক্তভোগি পরিবারকে কিছু টাকা দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার কথা বলে। আর যদি বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়, তাহলে পুরো পরিবারকে মেরে গ্রাম থেকে বের করে দেয়া হবে বলেও হুমকি দেয়া হয় তখন। তারপর বিচার না পেয়ে উল্টো ওই পরিবারটি ভয়ে দিনাতিপাত করছিল। বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকরা জানতে পেরে বুধবার দুপুরে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গেলে প্রথমে ভয়ে সবকিছু বলতে রাজি হয়নি। তখন স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে তাদের অভয় দিলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে বুধবার রাতেই ওই পরিবারটিকে সুরক্ষা দিয়ে থানায় নিয়ে আসে। রাতেই ৪ মাতব্বরসহ অভিযুক্ত ধর্ষকের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে মামলা করেন।
মুরাদনগর থানার ওসি সাদেকুর রহমান বলেন, ঘটনার পর থেকে ধর্ষক কাশেম মিয়া ও মাতব্বররা পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *