জাতীয়

ভৈরব রেলস্টেশন থেকে চুরির কম্বলের কার্টুন, ৬দিন পর বিক্রিকালে আটক

মো:শাহনূর,ভৈরব প্রতিনিধি:
৯কার্টুন কম্বল চট্রগ্রাম রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে বুকিং আসা কম্বলের ১কার্টুন চুরি হয় ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে। চুরির ৬দিন পর ভৈরব বাজারের একটি দোকানে বিক্রিকালে হাতেনাতে একজনকে আটকের পর বেরিয়ে আসে এক পুলিশ অফিসারসহ জড়িতদের নাম।
গত ১ নভেম্বর চট্রগ্রাম রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে ভৈরব বাজারের ব্যবসায়ী রেনু মিয়া নামে ৯টি কম্বলের কার্টুন বুকিং দেয় হানিফ মিয়া। বুকিং দেয়া কার্টুন গুলো নাসিরাবাদ ট্রেনে রাতেই ভৈরব স্টেশনে পৌঁছে। কার্টুন গুলো নিতে আসলে ১কার্টুন কম বুঝিয়ে দেয় ষ্টেশনে মালামালের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। কিভাবে একটি কার্টুন গায়েব হলো তা বলতে পারছেনা ভৈরব রেলওয়ে ষ্টেশনের লেবার সর্দার আফজালুর রহমান টিটু।
ভোক্তভোগি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভৈরব রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে গায়েব হওয়া কম্বল গুলো গত ৭ নভেম্বর বুধবার ভৈরব বাজারে রেনু মিয়ার দোকানের পাশেই মজিব গার্মেন্টস নামে একটি কম্বলের দোকানে বিক্রি করতে গেলে কার্টুন দেখে তার কেনা কম্বল গুলো চিনে ফেলেন রেনু মিয়া। তিনি তখন মার্কেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি মো: বাচ্চু মিয়াসহ অন্যন্য লোকজন নিয়ে ওই বিক্রেতাকে কম্বলসহ আটক করে। আটক হওয়া যুবক জানান, ভৈরব পৌর নিউমার্কেটের ৩ তলার স্টাইল জোনের মালিক মো: বাক্কি মিয়া কম্বল গুলো তাকে দিয়ে প্রতিটি ৩২০ টাকা দরে বিক্রি করতে চেয়েছিল। স্থানীয় লোকজন তখন স্টাইল জোনে ওই যুবককে নিয়ে গেলে স্টাইল জোনের মালিক বাক্কি জানান, ভৈরব থানার এসআই হুমায়ন ও হুমায়ুনের সোর্স হিসেবে কাজ করে ভৈরবের চিহ্নিত অপরাধী ফয়সাল ওই কম্বল গুলো বিক্রি করে দেয়ার জন্য বাক্কিকে বলে। পরে বাক্কি মিয়া তাঁর একজন প্রতিনিধি দিয়ে কম্বল গুলো বিক্রি করতে পাঠায়।
কম্বলসহ আটকের খবর ভৈরব বাজারের মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে মুহুর্তের মধ্যে। খবর পেয়ে লেবার সর্দার আফজালুর রহমান টিটু, এসআই হুমায়ুন ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের লোক বিধায় উপস্থিত স্থানীয় নেতৃবৃন্দ তাৎক্ষণিক মালিককে ২৬টি কম্বলের মধ্যে ২০ কম্বল বুঝিয়ে দেয়। বাকী ৬ কম্বলের মধ্যে ৩ টি কম্বলের টাকা এসআই হুমায়ুন জরিমানা দেয় বলে জানাগেছে।
রেনু মিয়া ও তার ছেলে রিমন জানান, রেল ভৈরব বাজারে কম্বল বিক্রিকালে এক যুবককে আটক করা হয়। পরে তারা জানতে পারে গায়েব হওয়া কম্বল এসআই হুমায়ুন ও তাঁর সোর্স ফয়সাল মিলে স্টাইল জোনের বাক্কির লোক দিয়ে মজিবুর রহমানের দোকানে পাইকারি বিক্রি করতে চেয়েছিল। পুলিশের এমন কর্মকান্ডে তারা হতভম্ব হয়েছেন।
স্টাইল জোনের মালিক বাক্কি জানান, এসআই হুমায়ুনসহ থানার বেশিরভাগ অফিসাররাই তাঁর দোকান থেকে মালামাল ক্রয় করা সুবাদে সম্পর্ক হয়। এসআই হুমায়ুন তাকে কম্বল গুলো বিক্রি করে দিতে বললে ভৈরব বাজারে পাইকারি কম্বল বিক্রি করেন নারায়ণগঞ্জের এক হকারকে প্রতিপিস ৩২০টাকা দরে বিক্রির মৌখিক চুক্তি হলে ফয়সাল কম্বল গুলো তার দোকানে পৌঁছে দেয় বলে জনান।
এঘটনায় লেবার সর্দার আফজালুর রহমান টিটু সাংবাদিকদেরকে নিউজ না করার জন্য বলেন। কম্বলের ৯টি কার্টুনই মালিককে বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং ভ্যান গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা থেকে কার্টুন চুরি হয়েছে বলে বিষয়াট অন্যদিকে ধাবিত করার চেষ্টা করেন সাংবাদিদের নিকট।
এ ব্যাপারে প্রধান বুকিং সহকারী কিশোর নারায়ণ চৌধুরী বলেন, বুকিংয়ে আসা মালামাল লেবার সর্দার প্রাপ্রককে বুঝিয়ে দেয়ার দায়িত্ব। চট্রগ্রাম থেকে আসা কম্বলের ৯টি কার্টুনের মধ্যে ৮টি বুঝিয়ে দেয়া হয় মালিককে। ১টি কার্টুন শর্ট পড়ে। রেজিষ্টার খাতায় ৮টি লিপিবদ্ধ করা হয়। শর্ট পড়া কম্বল গুলো বুধবার ভৈরব বাজারে থেকে উদ্ধার হওয়ার পর বাকী একটি কার্টুন রেজিষ্টারে গতকালই সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই হুমায়ুন জানান, বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে। তবে কম্বল গুলো ট্রেন থেকে কে বা কাহার ফেলে দিলে স্টেশনের পাশ থেকে উদ্ধার নিয়ে যায়। কম্বল গুলো বিক্রি করার উদ্দেশ্যে বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় নিজের মানসম্মান নিয়ে লজ্জিত বোধ করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *