জয়নাল আবেদীন রিটন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের ভৈরব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অদিদপ্তর ভৈরব সার্কেল অফিসে আগুন দেয়ার ঘটনায় আপন দুই ভাইসহ মোট চার জনকে গ্রেফতার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ। সর্বশেষ গতকাল সন্ধায় পুকুরপাড় গ্রাম থেকে জীবন মিয়া নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো আমলা পাড়া গ্রামের মৃত আক্কা মিয়ার ছেলে সাদ্দাম হোসেন , মহর আলীর ছেলে দীন ইসলাম ও জজ মিয়ার দুই ছেলে মোস্তাক ও জীবন মিয়া। তারা সবাই কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে রয়েছে। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মো ঃ আমজাদ শেখ বলেন, মোস্তাককে গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে প্রেরণ করলে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় আদালতে সে সহ তার ভাই জীবন ও জীবনের বন্ধু দীন ইসলাম আবগারী অফিসে আগুন দেয়ার ঘটনায় জড়িত বলে জবানবন্ধী দেয়। এর পর থেকে আমরা বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে একে একে সাদ্দাম, মোস্তাক, দীন ইসলাম ও জীবন নামে মোট চার জনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করি। মোস্তাক ও জীবন ওরা আমলাপাড়া গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে আপন দুই ভাই। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ভৈরব সার্কেল কার্যালয়ের পরিদর্শক মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, গত ২১ জানুয়ারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্তণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে র্যাব পুলিশের সমন্ময়ে যৌথ বাহিনী গঠন করে দিন ব্যাপী পুকুরপাড় , বাসষ্ট্যান্ড সহ শ্রীনগর বিভিন্ন এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়িতে মাদক বিরোধি অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে আটক করা হয়। ধারণা করছি এ কারণেই হয়তো আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীদের লোকজন ক্ষুব্দ হয়ে ঐ রাতেই সু-পরিকল্পিত ভাবে অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নিকান্ডে অফিসের একটি কম্পিউটার, প্রিন্টার , হাতকড়া , ভিডিও ক্যামেরা, চেয়ার টেবিল, ষ্টিলের আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে যায়। এ ঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে ভৈরব থানায় একটি মামলা দায়ের করি। এ পর্যন্ত পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে বলে জানতে পারি। ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মো ঃ শাহিন বলেন, গত ২১ জানুয়ারী রাতে দুর্বৃত্ত্বরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ভৈরব সার্কেল অফিসে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ২২ জানুয়ারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর থেকে আমরা তদন্ত শুরু করি। এক পর্যায়ে মোস্তাক নামে এক যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে নিজে ও তার বড় ভাই জীবন এবং জীবনের বন্ধু দীন ইসলাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে স্বীকার করে। দীন ইসলাম ও জীবন বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় আরো যারা জড়িত রয়েছে একে একে বাকিদেরও গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হবে। উল্রেখ্য , গত ২১ জানুয়ারী র্যাব পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অদিদপ্তরের লোকজন মিলে যৌথ বাহিনী গঠন করে দিন ভর মাদক বিরোধি অভিযান চালায় ভৈরবের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়। এসময় মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ঐ রাতে আনুমানিক দেড় টার সময় দুর্বৃত্তরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্ত কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দিলে অফিসের মূর্যবান নথিপত্রসহ কম্পিউটার, প্রিন্টার , হাতকড়া , ভিডিও ক্যামেরা, চেয়ার টেবিল, ষ্টিলের আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে যায়। এ ছাড়াও মুল্যবান কিছু জিনিষি পত্রও নিয়ে যায় দুর্বত্তরা। খবর পেয়ে ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন।