মো: রফিকুল ইসলাম রুবেল!
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে রাস্তার পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ময়লার ভাগাড়। প্রতিদিন পরিচ্ছন্ন কর্মীরা শহরের বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে তা ফেলছে শহরের বিভিন্ন রাস্তার পাশসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে। এতে করে সৃষ্টি হচ্ছে নানান ধরণের রোগ জীবানুসহ মারাত্মক পরিবেশ দূষণ। ময়লার দুর্গন্ধে মারাত্বক হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।
বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জন-জীবন। আক্রান্ত হচ্ছে শ্বাস কষ্ট, নিউমোনিয়া, হাপানিসহ বিভিন্ন রোগে। সড়কের পাশে বর্জ্য না ফেলে নির্দিষ্ট কোন স্থানে ফেলার দাবি এলাকাবাসির।
ভৈরব পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৫৮ সালে। বর্তমানে পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব জিল্লুর রহমানের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হলেও বাড়েনি পৌরবাসীর নাগরিক সুযোগ সুবিধা। ডাম্পিং স্টেশনের জন্য নিজস্ব কোন জায়গা না থাকায় ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে যত্রতত্র। পরিচ্ছন্ন কর্মীরা শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ময়লা-আবজর্না সংগ্রহ করে তা ফেলছে শহরের বিভিন্ন সড়কের পাশে। ভৈরব শহরের আনাচে কানাচে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ময়লার ভাগাড়।
এতে করে দীর্ঘদিনের জমাট হওয়া ময়লা-আবর্জনার স্তুপ থেকে মশা-মাছির দ্বারা বিভিন্ন রোগ জীবাণু সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে শিশু কিশোরসহ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নানান বয়সের মানুষ। পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার পরিবেশ।
এছাড়া ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশের মুখে (পলাশের মোড়) রেলওয়ে পুকুরে ময়লা আবর্জনা ফেলায় পুকুর টি অধিকাংশ জায়গা ভরাট হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে পানি নিষ্কাশনের জন্য হুমকির মুখে পরবে বিভিন্ন এলাকা। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয় এলাকাবাসির। তাই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা। এই জায়গাই ময়লা আবর্জনা ফেলা নিষেধ মর্মে পৌরসভার জারী করা নিষেধাজ্ঞা ৩টি সাইনবোর্ড থাকা সত্ত্বেও পৌরসভার আদেশ মানেন না পরিচ্ছন্ন কর্মীরা।
স্থানীয়রা বলেন, শহরে বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র বাড়া বাড়ির ময়লা ফেলায় আমরা নানান সমস্যায় ভুগছি। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্গন্ধে পথ চলা দায় হয়ে পড়েছে। রাস্তায় চলাচল করতে হলে নাক চেপে যেতে হয়। যত্রতত্র ময়লার ভাগাড় হওয়ায় এলাকার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে দূষিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বলছেন, আমাদের সন্তানদের স্কুলে এনে আমাদের অপেক্ষা করতে সন্তানদের স্কুল ছুটি হওয়া পর্যন্ত এসময়টা ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অনেক কষ্ট হয়। অন্তত মিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে যেন ময়লা না ফেলা হয় সেজন্য পৌর মেয়র সহ ভৈরবের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কাউন্সিলর বলেন, আমরা যারা পৌরবাসি আছি, অমাদের সবারই উচিৎ আমরা যেন যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা না ফেলি। পৌর কর্তৃপক্ষেরও উচিৎ একটি ডাম্পিং স্টেশন তৈরি করে এ ময়লাগুলো যেন কাজে লাগানো যায় তার ব্যবস্থা করা।
স্থানীয় একজন শিক্ষক বলেন, ভৈরব পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তাঘাটে ময়লা ফেলার কারণে লোকজন যারা আছে বিশেষ করে শিশুরা আমাশয়, ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দিকাশিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ সকল ময়লা যদি একটি নির্দিষ্ট স্থানে ডাম্পিং করা হতো অথবা অন্য কোন উপায়ে বিনষ্ট করা যেত তাহলে এই ধরণের রোগ বালাই থেকে লোকজন রেহাই পেত।
যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে একটি ডাম্পিং স্টেশনে ময়লা ফেলে শহরের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি স্থানীয়দের।