জয়নাল আবেদীন রিটন, বিশেষ প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ বিভিন্ন ইউয়নের গ্রামাঞ্চলে এখন বোরো ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী লাইন লগু ও পাসিং পদ্ধতিতে চারা রোপন করছেন এখন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রচন্ড শীতে রোদের দেখা মিলতেই কৃষকরা নেমে পড়ছেন তাদের জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করতে। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত চলতে থাকে বোরো ধান রোপন করতে জমি প্রস্তুত করা, সেচ দিয়ে পানি দেওয়া সহ হালচাষ করা। যেন বোরো ধান চাষের মহোৎসব চলছে সমস্ত ফসলি মাঠ জুড়ে। কৃষকরা বীজতলা থেকে চারা তুলছে আবার অনেকেই চারা রোপন করছেন। আবার এখনো যারা জমি প্রস্তুত করেনি তাদের অনেকেই জমি প্রস্তুত করতে জমিতে সেচ ও হালচাষের মাধ্যমে জমি তৈরি করছেন। যাদের জমি প্রস্তুত হয়ে গেছে তারা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী জমিতে লাইন, লগু ও সার্চিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন পাবে আর ধানের ন্যায্য মূল্য পেলে লাভবান হতে পারবে এমনটাই আশা করছেন উপজেলার কৃষকরা। কৃষি উপকরণের দাম কমিয়ে ধানের বাজার মূল্য বাড়ালে বাচবে কৃষক বৃদ্ধি পাবে কৃষি সম্প্রসারণ আর কৃষকরা উৎসাহিত হবে চাষাবাদে।
কৃষক মায়নুল ইসলাম বলেন, কৃষি উপকরণে দাম বেশি হওয়ায় আমরা বোরো ধান চাষ করে তেমন একটা লাভবান না। কিন্তু আমাদেরকে নিজেদের খাবারের চাহিদা মেটাতে ধান চাষ করতে হয়। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি সরকার যেন আমাদেরকে মৌশুমে সার বীজ দিয়ে সহায়তা করেন।
কৃষক আলী আকবর বলেন, আমরা কৃষক। জমি আছে বলে জমিতে চাষাবাদ করতে হয়। চাষাবাদ করে ফসল ফলাই। ফলন পেয়ে নিজেরাও খাই আবার কিছু বিক্রয়ও করি। গত কয়েক বছর যাবত ধানের মূল্য কম আর আবাদ খরছ বেশি হওয়ায় আমাদের এখন পোষায়না।
কৃষক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমাদের মুল পেশা হল কৃষি। বাপ দাদার আমল থেকে কৃষি কাজ করে আসছি। জমি আছে বলে পেটের দায়ে চাষাবাদ করতে হয়। পাছঁশত টাকা রোজে কামলা আনতে হয়। গত বছর আমরা ধান বিক্রয় কওেরছি ছয়শত টাকা মন। প্রতি মনে লোকশান হয়েছে দুইশত টাকা। নিরুপায় হয়ে আমাদেরকে চাষাবাদ করতে হয় । পরিবারের ভাতের যোগান দিতে হলেওতো ধান চাষ করতে হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলম শরীফ খান ঃ
এ বছর ভৈরব উপজেলায় বোরো ধানের আবাদের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় হাজার চারশ হেক্টর জমিতে। কৃষকরা বর্তমানে বোরো ধানের চারা বপন করিতেছে। আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহকারি কৃষি অফিসারসহ উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাগণ কৃষকদের বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্পর্কে বলা হচ্ছে তাদেরকে কম বয়সের চারা লাইন করে লাগানো, লগু এবং পাসিং করার জন্য বলা হয়েছে। যে সমস্ত জমিতে বোরো ধান লাগানো হইছে সেখানে লাইন লগু পার্সিং সঠিক ভাবে করা হয়েছে। কৃষকরা বিগত বছরের ন্যায় এবছরও তারা ব্রী ধান উনত্রিশ, ব্রী ধঅন আটান্ন এবং একাশি আবাদ করতেছে। আশা করি এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে।